কিছু দিন হল ব্যাপারটা নজরে এসেছে বিনতার। একটা অচেনা লোক সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ওদের বাড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে। কখনও বা বাড়ির সামনের মোড়ে দাঁড়িয়ে বাড়িটার দিকে তৃষ্ণার্ত চোখে তাকিয়ে থাকে! বিনতাদের বাড়িটা ছাদ পেটানো সাধারণ একতলা বাড়ি। এমন কিছু দৃষ্টিনন্দনও নয় যে হাঁ করে দেখতে হবে। এমনকী লোকটার হাবেভাবে মনে হয় না যে উনি কারও বাড়ি খুঁজছেন। তবে কি তাকানোটা পপির উদ্দেশে! ছি! ষাট-বাষট্টি বছর বয়সি একটা লোক, সে কিনা কলেজপড়ুয়া পপির দিকে তাকাবে! অবশ্য বলা যায় না! আজকাল খবরের কাগজে যা সব খবর বার হয়! আবার এটাও মাথায় ঘুরপাক খেয়েছে, তাকানোটা কি বিনতাকে দেখার জন্য! বাড়িটা অছিলামাত্র! কথাটা মনে হওয়া মাত্র, নিজের মনেই হেসেছে বিনতা। চুয়াল্লিশটা ঋতু পার করার পর আর কি ওর সেই আকর্ষণশক্তি আছে! এক বার ভেবেছিল, ডেকে জিজ্ঞেস করবে। কিন্তু পরিচয়হীন একটা লোকের সঙ্গে কথা বলতে মন চায়নি।
কথাটা স্বপনকে বলেছিল। কিন্তু সে নিজের ব্যবসা নিয়ে এতই ব্যস্ত, বিনতার দুশ্চিন্তার অংশীদার হতে চায়নি।
এক সময় ভাড়াবাড়িতে থাকতে থাকতে বিতৃষ্ণা ধরে গিয়েছিল বিনতার। নিজের একটা বাড়ি হবে, এমন ইচ্ছে বিনতার মতো স্বপনেরও কম ছিল না। কিন্তু ভাল পাড়ার মধ্যে জমি কিনে বাড়ি তৈরির নানা হ্যাপা! শহরতলিতে জমি কিনে বাড়ি বানালে পপির কলেজ, প্রাইভেট টিউশন, স্বপনের ব্যবসা সম্পর্কিত যাতায়াতের খরচ এবং সময়, দুটোই বেড়ে যাবে। তাই স্বপনের ইচ্ছে ছিল ভাল পাড়ার মধ্যে একটা পুরনো বাড়ি কেনার। আর সেই চেষ্টার ফলই বর্তমানের বাড়িটা।
গৃহপ্রবেশের পর থেকে দিনগুলো মন্দ কাটছিল না। পাড়াটা ভাল, পড়শিরাও খারাপ নয়। কিন্তু বাদ সাধল ওই লোকটা। লোকটাকে যে নির্দিষ্ট কোনও সময়ে দেখা যায়, এমন নয়। তবে সকালের দিকে এবং সন্ধের মুখেই বেশির ভাগ সময়ে দেখেছে বিনতা। এক বার ভেবেছিল পাশের ফ্ল্যাটের রঞ্জনার সঙ্গে ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলবে। তার পর সাতপাঁচ ভেবে আর এগোয়নি।
সে দিন দুপুরে খাওয়াদাওয়া সেরে স্বপন বিছানায় শরীরটা এলিয়ে দিয়েছিল। তন্দ্রার ভাবও এসেছিল।
বিনতা এসে বলল, ‘‘কি গো ঘুমোলে না কি?’’
স্বপন বিরক্ত হল। উত্তর দিল না। পাশ ফিরে শুল।
বিনতা ভ্রুক্ষেপ না করে বলল, ‘‘শোনো, অনেক বার বলেছি। কথাটা কানে তুলছ না। অন্তত মেয়েটার কথা মাথায় রেখো!’’
সাড়ে পাঁচটা বাজে। বিকেলের চায়ে সবে চুমুক দিয়েছে স্বপন। হঠাৎ বিনতা ঘরে ঢুকে বলল, ‘‘লোকটা এইমাত্র গেল! তাড়াতাড়ি তুমি বাইরে যাও। মনে হয় এখুনি ফিরবে।’’
চা শেষ করে স্বপন গেটের কাছে এসে দাঁড়াল। বিনতা দেখল লোকটা ফিরে আসছে। ঘরের দরজার কাছ থেকে স্বপনকে চাপা গলায় কিছু বলতে যাচ্ছিল, এমন সময় স্বপন বলে উঠল, ‘‘আরে অর্ধেন্দু কাকু, কেমন আছেন?’’
অর্ধেন্দু হাল্কা হেসে বললেন, ‘‘এই তো চলছে কোনও রকম। তুমি কেমন আছ?’’
স্বপন বলল, ‘‘ভাল। কোথাও গিয়েছিলেন?’’
অর্ধেন্দু বললেন, ‘‘মোড়ের দোকানে।’’
স্বপন বলল, ‘‘গৃহপ্রবেশের দিন এলেন না যে!’’
হাল্কা হেসে অর্ধেন্দু বললেন, ‘‘একটু কাজে আটকে গিয়েছিলাম।’’
উত্তরটা গায়ে না মেখে স্বপন বলল, ‘‘সময় করে আসবেন এক দিন।’’
‘‘আর সময়! বরং চলো এখুনি এক বার দেখি, কেমন সাজিয়েছ তোমরা,’’ অর্ধেন্দু বললেন।
বিনতার মনে হল, লোকটা যেন পা বাড়িয়েই ছিল। শুধু ডাকের অপেক্ষা!
ঘরের ভিতরে এসে অর্ধেন্দু চারদিকে তাকালেন। নতুন আসবাব, রং, পর্দার ঝলকানিতে ঘরগুলো ঝলমল করছে। অর্ধেন্দুর চোখেমুখে একটা চাপা যন্ত্রণার ছাপ বিনতার নজর এড়াল না।
স্বপন বলল, ‘‘কাকু, বসুন।’’
অর্ধেন্দু বসলেন। বিনতার দ্বিধাগ্রস্ত মুখের দিকে তাকিয়ে স্বপন বলল, ‘‘কাকু, আমার বউ বিনতা।’’ তার পর বিনতাকে বলল, ‘‘ইনিই অর্ধেন্দু রায়!’’
বাকিটা আর বলতে হল না। বিনতা বুঝতে পারল, এই অর্ধেন্দু রায়ই বাড়িটার মালিক!
বিনতা নমস্কার করে হেসে বলল, বসুন, ‘‘চা আনছি।’’
অর্ধেন্দু বাধা দিলেন, ‘‘আজ থাক। আর এক দিন এসে চা খেয়ে যাব। তবে, তোমাদের হাতে পড়ে বাড়িটাকে বেশ লাগছে।’’
******
শুধু এক বার নয়, এর পর অর্ধেন্দু বেশ কয়েক বার এলেন। প্রথম প্রথম বিনতার আড়ষ্ট লাগত। তার পর বিরক্তি। যখন তখন ডোরবেল বেজে ওঠে। বাজানোর কায়দাতেই বিনতা বুঝতে পারে, বুড়োটা আবার এসেছে! বাধ্য হয়েই দু’চারটে সৌজন্যমূলক কথা বলতেই হয়। মুশকিলটা হল, স্বপন বাড়িতে থাকাকালীন উনি খুব একটা আসেন না। মাঝে মাঝে বিনতার মনে হয়, এ আবার কেমন আপদ এসে ঘাড়ে জুটল! বুড়োটার হাবেভাবে মনে হয় না পপির উপস্থিতি ওনাকে তেমনভাবে টানে। কখনও যদি পপি সামনে পড়ে যায়, অর্ধেন্দু প্রশ্ন করেন, “কি, লেখাপড়া ঠিকঠাক চলছে তো? না কি শুধু আড্ডা দিতে কলেজে যাওয়া হচ্ছে?”
অর্ধেন্দুকে দায়সারা গোছের জবাব দিলেও, পরে বিনতার কাছে পপি রাগে ফেটে পড়ত, ‘‘আমি কলেজে কী করতে যাই সেটা সম্পূর্ণ আমার ব্যাপার। উনি আমাকে বলার কে! বুড়ো ভাম! ওকে বলে দেবে আমার সঙ্গে যেন ও ভাবে কথা না বলে!’’
অর্ধেন্দুর প্রশ্ন করার ধরন যে বিনতার ভাল লাগত তা নয়। তবে পপির মতো বলতে সৌজন্যে বাধত।
সে দিন রান্নাঘরে চূড়ান্ত ব্যস্ততা। পপির ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পপি কলেজে বার হবে। এমন সময় ডোরবেলটা বেজে উঠল। বিনতা রেগে উঠে বলল, ‘‘উঃ, জ্বালিয়ে মারল! বুড়োটা আসবার আর সময় পেল না!’’
দরজা খুলতে যাবে, পাশের ঘর থেকে পপি চেঁচিয়ে বলল, ‘‘মা, আমি কিন্তু দশটায় বেরোব।’’
বিনতা ঝাঁঝিয়ে উঠল, ‘‘জানি, জানি!’’
দরজা খুলতেই অর্ধেন্দু বললেন, ‘‘জানি তুমি ব্যস্ত। তুমি কাজ করো। আমি বাড়িটা একটু ঘুরে দেখি।’’
চোখেমুখে একরাশ বাদুড়-ঝোলা বিরক্তি নিয়ে বিনতা বলল, ‘‘ঠিক আছে!’’
পপি কলেজে বেরিয়ে যাওয়ার পর বিনতা বাইরে এসে দেখল অর্ধেন্দু এক মনে তুলসীমঞ্চের ঝাঁকড়া তুলসী গাছটার দিকে তাকিয়ে আছেন। বিনতার উপস্থিতি টের পেয়ে বললেন, ‘‘এটা আমার স্ত্রী লাগিয়েছিলেন। তুমি দেখছি এটার বেশ যত্ন করছ।’’
তুলসীমঞ্চের ঠিক পাশে একটা জবাফুলের গাছ। আশেপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আরও বেশ কয়েকটা ফুলগাছের চারা। কিছু দিন হল বিনতা লাগিয়েছে। সেটা দেখে অর্ধেন্দু বললেন, ‘‘তোমার বুঝি ফুলগাছের শখ?’’
বিনতা বলল, ‘‘ওই আর কী! তবে জবাগাছটা আগেই লাগানো ছিল।’’
অর্ধেন্দু বললেন, ‘‘ওটাও আমার স্ত্রীর লাগানো।’’
দ্বিধাগ্রস্ত বিনতা বলল, ‘‘আপনার স্ত্রী কি...’’
‘‘বেঁচে আছে’’, অর্ধেন্দু হাসলেন।
তার পর একটু হেসে অর্ধেন্দু আঙুল তুলে বললেন, ‘‘ওই যে গেটের পাশে মাধবীলতার গাছটা দেখছ, ওটাও আমার স্ত্রীর হাতেই লাগানো। আর ওপাশের নারকোল গাছটা আমার হাতেই বেড়ে উঠেছিল। এখন যেটা তোমাদের বেডরুম, সেটা আমাদেরও বেডরুম ছিল।’’
বিনতার রাগ হল। বাড়িটার প্রত্যেকটা জিনিসের মধ্যেই যেন অন্য এক জনের ছাপ!
বিনতা বলে বসল, ‘‘বাড়িটা আপনি বেচে দিলেন কেন?’’
অর্ধেন্দু হাসলেন। এগিয়ে গিয়ে নারকোল গাছটার গায়ে হাত বুলোতে বুলোতে বললেন, ‘‘কী যে বলি! সবই বেহিসেবি জীবনের মাশুল! পাকেচক্রে বাড়িটাও বেহাত হয়ে গেল! ’’
অর্ধেন্দুর মুখে ‘বেহাত’ শব্দটাতে অপমানের ঝাঁঝটা নীরবে সহ্য করল বিনতা।
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন অর্ধেন্দু। তার পর বলল, ‘‘তোমার কাজের সময় নষ্ট হল। কিছু মনে কোরো না। আসলে কী জানো, বাড়িটার মায়া কাটাতে পারি না! আচ্ছা, আসি।’’
বিনতা হ্যাঁ বা না কিছুই বলল না। অর্ধেন্দু ধীরে ধীরে গেটটা খুলে বেরিয়ে গেলেন।
******
বুড়ো আবার এসেছিল, রাতে খাবার টেবিলে সব শুনে স্বপন বলল, ‘‘ব্যাটা দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বোঝেনি, এখন এসেছে মায়া দেখাতে!’’
পপি ফুট কেটে বলল, ‘‘বাবা, ও ভাবে বোলো না! আফটার অল মায়ের বয়ফ্রেন্ড বলে কথা!’’
বিনতা কড়া গলায় বলল, ‘‘কলেজে পড়ে ভালই তো পাখা গজিয়েছে দেখছি! কার সঙ্গে কী ভাবে কথা বলতে হয় সেটা পর্যন্ত ভুলে গেছিস!’’
স্বপন বিরক্ত হল, ‘‘ওই বুড়ো যা একখানা চিজ! সরকারি চাকরির অহঙ্কারে ফেটে পড়ত! ভাইদের চিটিং করে মরণাপন্ন বাবাকে সেবা করার নামে এই বাড়ির দু’কাঠা জমি হাতিয়ে নিয়েছিল। বাড়িটা তৈরির জন্য অনেক টাকা লোন নিয়েছিল। লোনের কাঁচা টাকা হাতে পেয়ে দেদার ফূর্তি করেছে! গাড়ি কিনেছে, জুয়া খেলেছে, মদ গিলেছে! কোনও কিছুই বাদ ছিল না! শেষে মাইনের টাকা দিয়ে ধার শোধ করতে না পেরে বাড়িটাই বেচে দিল। এই লোকটাকে একদম পাত্তা দেবে না!’’
‘‘তুমি এত কথা জানলে কী ভাবে?’’ বিনতা অবাক হল।
স্বপন বলল, ‘‘ওর কীর্তিকলাপ এ পাড়ার সবাই জানে। কেন, ভুলে গেছ, এই বাড়ি বিক্রির সময়ে কী করেছিল?’’
বিনতার মনে পড়ল, অ্যাডভান্সের টাকা নেওয়ার পরে অর্ধেন্দু বাড়ি বিক্রি নিয়ে টালবাহানা শুরু করেছিলেন। সে সময় স্বপনের ঘুম ছুটে গিয়েছিল। স্বপনের বন্ধু বাবুয়ার মধ্যস্থতায় শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটা মিটেছিল।
ডাইনিং টেবিল ছেড়ে উঠতে উঠতে স্বপন বলল, ‘‘জিনিস পাওয়া সহজ, তাকে ধরে রাখতে কপাল চাই, বুঝলে!’’
স্বপনের শেষ কথাটা বিনতার সারা শরীরে সুঁচ ফুটিয়ে দিল। বাসন গুছোতে গুছোতে বিনতা বলল, ‘‘সে আর আমি জানি না! বাপের বাড়ি বলে মেয়েদের একটা নিজস্ব জায়গা থাকে। আমার সেটাও নেই!’’
স্বপন তাকাল বিনতার দিকে। বিনতার মুখটা থমথমে।
স্বগতোক্তি করে বিনতা বলল, ‘‘ছোট থেকে যে জায়গাটাতে বড় হয়েছি, সেটাও ধরে রাখতে পারলাম না। অর্ধেন্দুবাবুর কথা শুনে কী করব!’’
বিনতার এই মানসিক কষ্টের জায়গাটা স্বপন ভালই জানে।
শহরতলির ব্যস্ততম জাতীয় সড়কের ধারে দশ কাঠা জমির ওপরে গাছগাছালির ছায়ায় ছিল বিনতাদের একতলা বাড়ি। জমি সমেত বাড়িটা বিনতার বাবা ওদের তিন বোনের নামে লিখে দিয়েছিলেন। প্রয়োজনের তাগিদে দুই বোন আগেই ওদের অংশটা বেচে দিয়েছিল এক ধাবা মালিকের কাছে। তার পর থেকে লোকটা ক্রমাগত স্বপনকে উপরোধ করে যাচ্ছিল বিনতার অংশটা বিক্রি করে দেওয়ার জন্য।
বিনতাই দাঁত কামড়ে আগলে রেখেছিল। শেষে এই বাড়ি কেনার টাকা যখন কম পড়ল, তখন এক রকম স্বপনের চাপে পড়েই ওর ভাগটুকু ছেড়ে দিয়েছিল। নিজস্ব বাড়িতে থাকার ইচ্ছেটা পৈতৃক জমি বিক্রি করার অনিচ্ছেটাকে গিলে ফেলেছিল!
******
ভোরবেলা ঘুম ভেঙে গেল বিনতার। দরজা খুলে বাইরে এল। অন্ধকারের জরায়ু ছিঁড়ে ভোরের আলো জবাফুলের গাছটার ওপর পড়েছে। অজান্তেই বিনতার চোখটা সেটার উপর পড়ল। ওর মনে হল, বাড়িটা যেন এখনও নিজেকে পুরোপুরি বিনতাদের কাছে বিলিয়ে দেয়নি। কোথাও যেন আড়াল করে রেখেছে। অথচ এই বাড়ির মধ্যেই ঢুকে আছে ওর শৈশব কৈশোর আর যৌবনের স্মৃতি বিক্রির টাকা!
বিনতার চোখের সামনে একটা ছবি ভেসে উঠল। শহরতলির ওর পৈতৃক ভিটেতে একটা ধাবা রমরমিয়ে চলছে। সামনের জাতীয় সড়কে দূরপাল্লার গাড়িগুলো দাঁড়িয়ে আছে। যাত্রী, ড্রাইভার, খালাসিরা যে যার মতো চৌপাইতে শুয়ে বসে আছে, কেউ বা খাবার খাচ্ছে, প্রাতঃকৃত্য সারছে, কেউবা জল দিয়ে গাড়ি ধোয়া-মোছা করছে। চার-পাঁচটা বড় বড় উনুন গনগন করে জ্বলছে। ওদের পাঁচজনের সংসারের কত গল্প, রাগ, দুঃখ, অভিমান, আনন্দের মুহূর্তগুলো ওই আগুনে পুড়ে ধোঁয়া হয়ে বাতাসে মিশে যাচ্ছে!
একটা প্রশ্ন ভেসে উঠল বিনতার মনে। পপির যখন বিয়ে হয়ে যাবে, ওরাও যখন আর থাকবে না, তখন কী হবে এই বাড়ির? এই বাড়িও কি ভবিষ্যতে আরও হাতবদল হবে? এ কি শুধুই এক হাতবদলের নাটক! অর্ধেন্দু রায়ের মতো বিনতাও সেই নাটকের এক জন কুশীলব!
চোখদুটো মুছল বিনতা। মনে মনে ঠিক করল, এর পর অর্ধেন্দুবাবু এলে অন্তত এক কাপ চা খাওয়াবে। অনুরোধ করে হলেও খাওয়াবে। এখনও পর্যন্ত অর্ধেন্দু রায়কে এক কাপ চায়ের আন্তরিকতাটুকুও দেখানো হয়নি!