আজকাল প্রায়ই খবরের কাগজ খুললে দেখি, কোনও কোনও বয়স্ক মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে হারিয়ে যাচ্ছেন। বাড়ির ঠিকানা ভুলে গিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ফ্যা-ফ্যা করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অবশেষে অন্য পথচারীদের সন্দেহে আর পুলিশের হস্তক্ষেপে তাঁরা বাড়ি ফিরছেন। যাঁদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না, তাঁদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এই ধরনের ব্যাধিগ্রস্তদের জন্যে তৈরি কোনও হোমে বা বৃদ্ধাশ্রমে।
বড় বাজে অসুখ এই স্মৃতিভ্রংশ। শরীরে অন্য কোনও গন্ডগোল নেই, একেবারে ফিট, শুধু মগজটাই গিয়েছে বিগড়ে। ঠিক পাগল নয়, স্মৃতি ফিরে এলে আবার একেবারে স্বাভাবিক। শুধু নাম-ঠিকানা ভুলে যাওয়া নয়, আইডেন্টিটি ক্রাইসিসও হয়, অর্থাৎ নিজের সত্তা ভুলে অন্যের সত্তায় নিজেকে নিয়ে বসানো। যেমন, কারও আইডল হয়তো বিরাট কোহালি, তাই কিছু ক্ষণের জন্য সে নিজেকে বিরাট কোহালি ভাবতে শুরু করল, আর দু’হাত বেঁকিয়ে হাওয়ায় ব্যাট চালিয়ে সপাটে মারল ছয়। এই রকম আর কী!
এই ধরনেরই এক জন মহিলার পাল্লায় পড়েছিলুম এক বার। সে কী কাণ্ড! তাঁর ভাল করতে গিয়ে আমার একেবারে ল্যাজে-গোবরে অবস্থা। অবশেষে পুলিশের দয়ায় উদ্ধার পাই।
সে দিন বাজার করে ফিরছিলুম। কী কারণে যেন, ফিরতে বেশ বেলা হয়ে গিয়েছিল। আমাদের বাড়ি থেকে কাছের বাজারটায় যেতে হলে একটা পার্কের পাশ দিয়ে ঘুরে গিয়ে বড় রাস্তায় পড়তে হয়। কিন্তু পার্কের পাশ বরাবর পুরো রাস্তাটাতেই হকারদের রাজত্ব। পায়ে চলার রাস্তাটা দখল হতে হতে ক্রমশ চাষের জমির আলপথ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার উপর কর্পোরেশনের দয়ালু হাতে বসানো ফুটপাথের টালিগুলো আলগা হয়ে এখন হোঁচট খাওয়ার ফাঁদ। প্রায় মানুষ-মারা কল। রাস্তায় নেমে যে হেঁটে যাব, সেখানে আবার বাস আর বাইকের সুপারসনিক গতি, কখন যে কাগজ হয়ে রাস্তার বুকে সেঁটে যাব তার ঠিক নেই। বরং পার্কের ভিতর দিয়ে গেলে নির্ঝঞ্ঝাটে হাওয়া খেতে খেতে পৌঁছনো যায়। তাই আমি বড় রাস্তায় না নেমে পার্কের রাস্তাটিই ধরি। সে দিনও তাই করলুম।
পার্কের পিছন দিকে বাচ্চাদের একটা প্লে-স্কুল আছে। মর্নিং সেকশনের ছুটির সময় অনেক বাচ্চার মা তাড়াতাড়ি এসে গেলে পার্কের বেঞ্চিতে বসে অপেক্ষা করে। সেই দিন পার্কের একটা বেঞ্চির পিছন দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ চোখে পড়ল বেঞ্চিতে বসা এক জন ভদ্রমহিলার দিকে। পিছন থেকে খুব চেনা চেনা লাগছে! সেই চুলের স্টাইল, সেই পিঠের গড়ন, সেই বসার ভঙ্গি। মঞ্জুলা মজুমদার! আমাদের কলেজ ক্যান্টিনের মধ্যমণি। সংক্ষেপে আমরা ডাকতাম ‘মম’ বলে। সত্যিই তাকে আমরা সবাই মনে মনে ভাবতাম মম, অর্থাৎ আমার। ও এক দিন কলেজ কামাই করলে আমাদের সারাটা দিন মেঘলা হয়ে থাকত। আজ এত দিন পরেও সে কথা মনে পড়তে মাথা থেকে পা পর্যন্ত শিহরন খেলে গেল।
ঠিক দেখছি তো? নিশ্চিত হওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে পড়লাম। বেঞ্চির সামনে দিয়ে ঘুরে যাওয়ার অছিলায় আড়চোখে দেখে নিলাম। হ্যাঁ, এই সেই মেয়ে… আজকে মহিলা। বেশ বয়স হয়ে গিয়েছে, আমারই বয়সি তো! কিন্তু মুখের গড়ন ঠিক একই রকম আছে। এমন একটা বৈশিষ্ট্য আছে এ মুখের গড়নে, যে সবার থেকে আলাদা করে চেনা যায়, ঠিক আগে যেমন ছিল। মাঝে বহু বছর দেখা হয়নি বটে, তবে ওর খবর পেতাম মাঝে মাঝে। আমার কলেজের বন্ধুদের সঙ্গে যখন যেখানে দেখা হত, যেটুকু কথা হত, তার মধ্যেই জায়গা করে নিত মম-র প্রসঙ্গ। বিশেষ করে কেশবের সঙ্গে দেখা হলে তো কথাই নেই, কারণ পড়বি তো পড় মম’র শ্বশুরবাড়ি গিয়ে পড়েছে কেশবের পাশের পাড়ায়। আমার রিটায়ারমেন্টের আগে পর্যন্ত কেশবের সঙ্গে অফিসপাড়ায় মাঝে মাঝে দেখা হত, কথাও হত। আমার সঙ্গে অবশ্য মম-র কোনও দিন দেখা হয়নি, তবে মনে মনে চাইতাম এক বার যদি হঠাৎ দেখা হয়ে যায়! কত বার কেশবের বাড়ি যাওয়ার ছল করে ওদের পাড়ায় টহল মেরেছি, কিন্তু কোনও দিনই শিকে ছেঁড়েনি।
যা-ই হোক, কেশবের কাছেই শুনেছিলাম, মম-র বিয়ে খুব একটা সুখের হয়নি। স্বামী-শাশুড়ির সঙ্গে ঝামেলা লেগেই থাকত। কখনও কখনও সেই ঝামেলা শ্বশুরবাড়ির বাইরে বেরিয়ে একেবারে রাস্তায়ও চলে আসত। পাড়ায় লোক জড়ো হয়ে যেত। কিছু দিন আগে শুনলাম মম-র মাথাটা বিগড়েছে, ডিমেনশিয়ায় ধরেছে। মানে স্মৃতিভ্রংশ অসুখ। মাঝে মাঝেই নাকি রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে আর ঠিকানা ভুলে যায়। শ্বশুরবাড়ির লোকজন খুঁজতে বেরোয়, পুলিশেরও সাহায্য নেয়।
তা, আজ কি সেই রকমই একটা দিন! আবারও মম সবার অলক্ষে এত দূর চলে এসেছে? তাই-ই হবে নিশ্চয়ই! এসেই পড়েছে যখন, তখন না দেখা করে চলে যাওয়া কি উচিত হবে? তার উপর হৃদয়ের পেয়ালায় রোমাঞ্চের চা চলকে উঠে ভিজিয়ে দিয়েছে সারা গা। দেরি না করে সোজা তার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম।
‘‘কী রে মঞ্জুলা, চিনতে পারছিস?’’ বলে ধপাস করে তার পাশেই বসে পড়লাম। মঞ্জুলা চমকে উঠে থতমত খেয়ে নিজেকে সরিয়ে একটু ব্যবধান বাড়িয়ে নিল। তার পর বলল, ‘‘অ্যাঁ!’’ তার পর কিছু ক্ষণ মুখের দিকে একদৃষ্টে দেখতে দেখতে বলল, ‘‘না তো, ঠিক চিনতে পারছি না তো! ভেরি স্যরি!’’
‘‘না না, স্যরি হওয়ার কী আছে? বয়সটা তো আর ধরে রাখা যায় না, তাই অনেক পাল্টে গিয়েছি। তুই কিন্তু প্রায় এক রকমই আছিস। আরে, আমি দীপক, দীপক ভটচাজ। কলেজে তোর পিছনের বেঞ্চিতে বসতাম।’’
‘‘দীপক ভটচাজ? নাঃ, ঠিক মনে পড়ছে না। এর আগে কোথায় দেখা হয়েছিল বলুন তো!’’
‘‘দেখা হয়েছিল কী রে! রোজই তো দেখা হত!’’
‘‘কোথায়?’’
‘‘কেন, স্কটিশ চার্চ কলেজে! ফিজ়িক্স পাসকোর্সের ক্লাসটা আমরা এক সঙ্গেই করতাম। তার পর ক্যান্টিনে গিয়ে হুল্লোড়। তুই, আমি, কেশব, নির্মল, সমীর… আমার ছিল কেমিস্ট্রি অনার্স, তোর ম্যাথমেটিক্স। পাসকোর্সের ক্লাসগুলোতেই এক সঙ্গে হতাম।’’
‘‘দাঁড়ান, দাঁড়ান। আমি তো সায়েন্স গ্র্যাজুয়েটই নই! আমার সাবজেক্ট ছিল ফিলসফি। তা ছাড়া, আমি তো বঙ্গবাসী কলেজে পড়তাম। স্কটিশ কলেজ কোনও দিন চোখেই দেখিনি। আপনি হয়তো আমায় চিনতে ভুল করছেন। মাফ করবেন, কী নাম যেন বললেন আমার?’’
‘‘মঞ্জুলা! মঞ্জুলা মজুমদার।’’
‘‘কিন্তু ও নাম তো আমার নয়!’’
‘‘তবে আপনার নাম কী?’’
‘‘আমার নাম সুচিত্রা।
সুচিত্রা সেন।’’
মনে মনে বললাম, ‘হতেই পারে না। তুই মঞ্জুলাই। আমার চোখ কি এত ভুল করবে? বুঝেছি। এ সব তোর স্মৃতিভ্রংশেরই লক্ষণ।’
বড় মায়া হল ওর উপর। এত সুন্দরী ছিল তরুণ বয়সে, তার বয়সকালে এই হাল! বড় জঘন্য অসুখ এটা। আমি অবশ্য হাল ছাড়ার পাত্র নই। স্মৃতি তার ফিরিয়ে আনবই।
‘‘ও হ্যাঁ, যা বলছিলাম, মিসেস মজুমদার।’’
‘‘মজুমদার নয়, সেন। মিসেস সুচিত্রা সেন।’’
মনে মনে ভাবলাম, এটাই হয়তো ওর আইডেন্টিটি ক্রাইসিস। যে-সে নয়, একেবারে সুচিত্রা সেন ভাবছে নিজেকে! এই রকমই হয়।
‘‘হ্যাঁ, যা বলছিলাম মিসেস সেন। আপনি কি জানেন যে আপনার ডিমেনশিয়া আছে?’’
‘‘কী আছে?’’
‘‘ডিমেনশিয়া। মানে স্মৃতিভ্রংশ রোগ।’’
‘‘সেটা আবার কী ব্যাপার! খায় না মাখে?’’
‘‘সেটা একটা অসুখ। মস্তিষ্কবিভ্রমও বলতে পারেন। কখনও কখনও নিজের নাম-ঠিকানাও ভুল হয়ে যায়। সময় সময় নিজেকে অন্য কোনও বিশেষ কেউ বলে মনে করা, যেমন এখন নিজেকে ভাবছেন মহানায়িকা সুচিত্রা সেন।’’
‘‘দেখুন মশাই, বিরক্তির সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছেন! আবার বলছি খুব ভুল করছেন। আপনি আমাকে যে লোক ভাবছেন, আমি তিনি নই। আমি সুচিত্রা সেনই, মঞ্জুলা মজুমদার নই, আপনি চিনতে ভুল করছেন।’’
‘‘না না, সুচিত্রা সেনকে কে না চেনে! বাঙালির চিরকালীন হার্টথ্রব।’’
‘‘দূর মশাই, দু’জনের এক নাম হতে পারে না ? যান তো, আর বিরক্ত করবেন না। আমায় একটু একা থাকতে দিন।’’
‘‘জানি তো! একাকিত্বের বেদনা যে কী জিনিস…’’ আমি কাব্যিক ঢঙে পরিবেশন করতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু মঞ্জুলা কটমট করে আমার দিকে তাকিয়ে ঝট করে উঠে পড়ল বেঞ্চি থেকে। তার পর গটমট করে হাঁটা লাগাল। আমিও ছাড়বার পাত্র নই, তার পিছন পিছন ছুটলাম। ওর হাঁটার স্পিড আমার চেয়ে বেশি, তাই আমাকে প্রায় দৌড়তে হচ্ছে। তাকে থামাবার জন্য দৌড়ে গিয়ে তার হাতটা ধরে ফেললাম। বললাম, ‘‘দাঁড়া, যে কথাগুলো বলছি শোন…’’
এক ঝটকায় হাত ছাড়িয়ে নিয়ে চিৎকার করে উঠল মঞ্জুলা, ‘‘অসভ্য লোক কোথাকার! সাহস তো কম নয়। গায়ে হাত দেওয়ার ধান্দা! দেখাচ্ছি মজা।’’
বাচ্চাদের মায়েরা আর একটা বেঞ্চে বসে আড্ডা মারছিল। সেই বেঞ্চিটার সামনে দৌড়ে গিয়ে মঞ্জুলা বলল, ‘‘দেখুন দিদি, এই অসভ্য লোকটা আমার পিছনে লেগেছে, হাত ধরে টানছে…’’ বলতে-বলতেই মায়েরা একেবারে হইহই করে উঠল। আমাকে এই মারে তো সেই মারে! সঙ্গে গালাগাল— অসভ্য, ইতর, বুড়ো বয়সে ভীমরতি ইত্যাদি ইত্যাদি। নারীকণ্ঠের চিৎকারে পুরুষ পথচারীরাও দৌড়ে এল। এ বার যদি এলোপাথাড়ি কিল-চড় চলে, তা হলে আর রক্ষে নেই। আমি হাতজোড় করে বলতে লাগলাম, ‘‘শুনুন, শুনুন, দয়া করে আমার কথাটাও শুনুন।’’
তখন ঘুসি পাকানো মুষ্টিগুলো একটু আলগা হল মনে হল। নারীকণ্ঠের ভল্যুমও একটু কমল বোধহয়।
আমি বলতে লাগলাম, ‘‘এঁকে আমি চিনি। ইনি পাশের পাড়ায় থাকেন। ডিমেনশিয়ার রোগী। সব কিছু ভুলে যান, নাম-ঠিকানা ভুলভাল বলেন…’’
মঞ্জুলাও চিৎকার করে বলে যায়, ‘‘মিথ্যুক কোথাকার! এ সব একদম মিথ্যে কথা! এই অসভ্য লোকটাকে মেরে শিক্ষা দিয়ে দিন তো।’’
আমারও মেজাজ সপ্তমে চড়ে গেল। বলতে লাগলাম, ‘‘আপনারা এখুনি পুলিশে খবর দিন। সত্যি-মিথ্যে বিচার করবে পুলিশ।’’ আমার মুখে পুলিশের নাম শুনে অনেকেই মনে হল যে একটু বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে। আমি যদি ইচ্ছে করে মিথ্যে বলে থাকি, তা হলে নিশ্চয়ই নিজেই পুলিশের কথা বলব না।
একটা তাগড়াই চেহারার লোক হেঁড়ে গলায় সকলকে থামিয়ে দিয়ে বলল, ‘‘ঠিক আছে, আপনারা দু’জনেই এখানে দাঁড়িয়ে থাকুন। আমি পুলিশ ডাকছি।’’
মঞ্জুলা তো আরও খেপে গেল। সে চেঁচিয়ে উঠল, ‘‘তা হলে আমার কথা কেউ বিশ্বাস করছেন না তো, চূলোয় যান। স্কুল ছুটি হয়ে গিয়েছে। আমার বাচ্চাটা দাঁড়িয়ে থাকবে। আমায় যেতে দিন। কখন আপনাদের পুলিশ আসবে তার জন্যে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকতে হবে?’’ বলে হাঁটতে শুরু করে দিল। সেই তাগড়াই লোকটার এতে আরও তেজ বেড়ে গেল। সে মঞ্জুলার সামনে দু’হাত ছড়িয়ে বলল, ‘‘দাঁড়ান, দাঁড়ান, একটা ফয়সালা হলে তবে যাবেন। তলে তলে অনেক কিছু ব্যাপার আছে মনে হচ্ছে। তাই পুলিশই এর ব্যবস্থা করবে।’’
বলেই পকেট থেকে মোবাইল বের করে ওয়ান জিরো ওয়ান ডায়াল করে দিল।
দশ মিনিটের মধ্যে তিন জন কনস্টেবল নিয়ে ওসি সাহেব হাজির। নারীনির্যাতন বলে কথা! পার্কের গেটে জিপ থামতেই ওসি সাহেব দৌড়ে এসে ভিড়ের মধ্যে আমায় দেখেই যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন। মনে হল যেন, কী ভেবেছিলেন আর
কী হল। মঞ্জুলা ওসির কাছে দৌড়ে গিয়ে চেঁচাতে লাগল, ‘‘আপনি এখুনি এই লোকটাকে লক আপে পুরুন। রাস্কেল কোথাকার।’’
ওসি সাহেব হাত তুলে সবাইকে থামতে বললেন, তার পর আমার দিকে এগিয়ে এসে বললেন, ‘‘কাকাবাবু, আপনি এই বেঞ্চিটায় একটু বসুন। আমি আসছি।’’ বলে ভিড়ের উদ্দেশে বললেন, ‘‘আপনারা এই দিকে একটু সরে আসুন।’’ বলে কী যেন সব চাপা গলায় বলতে লাগলেন। শুধু কানে এল, ‘‘…উনি হলেন কাউন্সিলর বরেন গুপ্তের মামাশ্বশুর।’’ শুনে গর্বে আমার বুক ফুলে উঠল। ওসির ভাষণ শুনেই জমে ওঠা ভিড় কেন যে দ্রুত পাতলা হয়ে গেল কে জানে।
মঞ্জুলাও চলে যাচ্ছে দেখে আমি হাঁই-হাঁই করে উঠলাম, ‘‘আরে ওসি সাহেব, ভদ্রমহিলা যা-ই বলুন, ওকে একা ছাড়বেন না, ও তো নাম-ঠিকানা ভুলে গিয়েছে। কোথায় যেতে কোথায় চলে যাবে।’’ ওসি সাহেব বললেন, ‘‘আপনি চিন্তা করবেন না। উনি ঠিক পৌঁছে যাবেন। আপনি এখন কোথায় যাবেন অরুণাংশুবাবু, থুড়ি আজকের দীপকবাবু?’’
‘‘আমি বাড়ি যাব। একটু পৌঁছে দেবেন? এত ফালতু ঝামেলায় বাড়ি যাওয়ার রাস্তাটা গুলিয়ে ফেলেছি!’’ আমি বলেছিলাম, মনে পড়ছে।