ঠিকুজি না মিললে বিয়ে হবে না। বিয়ে তো দূরের কথা, পাত্রী দেখতে যাওয়া চলবে না। অনিরুদ্ধর পিসিমার কড়া অর্ডার।
একে অনিরুদ্ধ ওরফে অনি চিরকাল মুখচোরা, তার উপর পিসিমা শুধু তার মায়ের মতোই নন, বাবারও উপরে মাথায় তোলা। মূল কারণ দুটো। প্রথমত, উনি বিয়ের এক বছরের মধ্যেই শুনেছি বাধ্য হয়ে ব্যাক টু প্যাভিলিয়ন, তার পর অনির পৃথিবীতে ল্যান্ডিং। সেই থেকে অনিকে কোলেপিঠে মানুষ করেছেন তিনি। তাই অনির বাবা-মা শুধুই নয়, সমস্ত আত্মীয়-স্বজনদেরই সহানুভূতির পাত্রী পিসিমা। দ্বিতীয়ত, উনি টিভি-সিরিয়ালের কুচুটে খুঁতখুঁতে পিসিমা নন, ভাইয়ের বৌ অর্থাৎ অনির মায়ের সঙ্গে হিংসুটেপনা করতে কোনও দিন দেখা যায়নি, এক কথায় ঝগড়ুটে নন। তাই আড়ালে-আবডালে ‘খান্ডারনি’ জাতীয় ফিসফাস তাঁর বিরুদ্ধে কখনও শোনা যায়নি। তাঁর চেহারায় বেশ ব্যক্তিত্ব ফুটে বেরোয়।
ফলে পরিবারের প্রায় সকলেই তাঁকে বেশ মাথায় তুলে রেখেছে। তাঁর কথা চট করে কেউ অমান্য করে না। ঠিকুজির ব্যাপারেও তাই সশব্দ প্রতিবাদ এখনও ওঠেনি। সবাই বোঝে যে আজকের ফেসবুক-টুইটারের যুগে ঠিকুজি গুরুত্ব দেওয়া মানে ই-মেলের সঙ্গে মোগল আমলের পায়রা-মেলকে একাসনে বসানো। তবু এ নিয়ে তর্কাতর্কিতে এখনই কেউ যেতে চায়নি, কারণ এত দিন অনির বিয়ের তাড়া পড়েনি। অনির বাবা-মা দু’জনেই ঠিক করে রেখেছেন যে সময় হলে পিসিমাকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে ঠিক রাজি করানো যাবে, তাই এখনই ঠিকুজি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে।
কিন্তু আর ক’দিন? নয় নয় করে অনি চৌত্রিশে পড়ল বলে! অধিকাংশ বন্ধুদের বিয়ে হয়ে গেছে। এখন সকলেই দেখা হলে রীতিমতো চার্জ করে, ‘‘কী রে, আর কবে
বিয়ে করবি?’’
বন্ধুদের মধ্যে আমার সঙ্গে অনির ভাব একটু বেশি। এক স্কুলে সেই ক্লাস থ্রি থেকে পড়েছি আমরা। পাশের ফ্ল্যাটেই থাকি, বিয়ের আগে মোড়ের ফ্ল্যাটবাড়িটার তিনতলার মেয়েটির জন্য একই রকম ধুকপুকুনি অনুভব করেছি। ছোটবেলা থেকে ওদের বাড়িতে আমার অবাধ যাতায়াত। পিসিমাও আমাকে অপছন্দ করেন বলে কোনও দিন মনে হয়নি। ওদের ছাদে গিয়ে যখন ঘুড়ি ওড়াতাম বা ঘরে ক্যারম খেলতাম, তখন অনেক চানাচুর, অমলেট, গুজিয়া খেয়েছি। এ সবের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন অনির পিসিমাই।
অবশ্য, সম্প্রতি অনির সঙ্গে আমার হৃদ্যতা বাড়ার আর একটা গভীর কারণও আছে। তা হল আমার মামাতো শ্যালিকা নীপবীথি। প্রায়ই আসে আমাদের বাড়ি। সাইকোলজির ছাত্রী। তাই ওর গবেষণাপত্রের খটোমটো ক্যালকুলেশনগুলো বিনামূল্যে অঙ্কের শিক্ষক জামাইবাবুর কাছে এসে একটু ঝালিয়ে নিতে হয়। এর বাইরে ওর পিঠোপিঠি দিদি অর্থাৎ আমার বৌ রঞ্জিনীর সঙ্গে শপিং আর নারী-স্বাধীনতাচর্চায় মেড ফর ইচ আদার। সেই সূত্রে আমাদের হাউজ়িং-এ দুগ্গাপুজোয় ভোগ খাওয়া, বসে আঁকো প্রতিযোগিতায় বিচারক হওয়া ইত্যাদির দৌলতে অনির সঙ্গে আজকাল একটু বেশি হাসাহাসি করতে দেখা যাচ্ছে তাকে। মোবাইল নম্বর আদানপ্রদানও নিশ্চয়ই হয়ে গিয়েছে। কেননা, আজকাল যখনই নীপবীথি বাড়িতে আসে, তখনই খবর পাই যে অনি তাড়াতাড়ি অফিস থেকে ফিরে এসেছে। প্রথম দিকে নীপবীথি অঙ্ক কষা হয়ে গেলে নানা রকম বকবক করে আমার মাথা ধরাত বা দিদির সঙ্গে রান্নাঘরে গিয়ে টুকটাক মুখ চালাত। এখন দেখি, কাজ হয়ে গেলে চলে যাওয়ার জন্যে উসখুস করে।
সন্দেহটা সত্যি হতে বেশি দেরি হল না। এক রবিবার সস্ত্রীক চায়না টাউনে চিনা খানা উপভোগ করতে গিয়ে একেবারে পিছনের আলো-আঁধারি টেবিলটায় বামাল সমেত ধরা পড়ে গেল ওরা। অনির মাথায় পড়ল রঞ্জিনীর এক গাঁট্টা আর শ্যালিকার কান ধরে মুলে দিলাম আমি। অবশ্য দুটো শাস্তিই আদর মাখানো। দু’জনের মুখেই অপ্রস্তুত লজ্জার গোলাপি আভা খেলে গেল।
কিন্তু এখানেই তো থেমে থাকলে চলবে না। ব্যাপারটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এই যুগলবন্দি আমাদের স্বামী-স্ত্রী দু’জনেরই খুব পছন্দ। অনি শুধু আমার বন্ধুই নয়, পাত্র হিসেবে খুবই দামি। মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে ইঞ্জিনিয়ার, বেতন বেশ ভাল। তার চেয়েও বড় কথা ও ভদ্র, চরিত্রবান, নরম মেজাজের বুদ্ধিমান ছেলে। আমার মাইডিয়ার শ্যালিকাটির জন্য এর চেয়ে ভাল পাত্র আর ভাবা যায় না। রঞ্জিনীরও একই মনোভাব। সেও জানে নীপবীথি যতই পশ্চিমি পোশাক পরুক না কেন, কমনরুমে টেবিল-টেনিস খেলুক না কেন, ছেলেদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিঁড়িতে আড্ডা দিক না কেন, আসলে সে মনেপ্রাণে বেশ ঘরোয়া। বেশি স্মার্ট, নায়ক-নায়ক, ফ্লার্টিং স্বামী তার পছন্দ নয়। তাই অনিকেই মনে ধরেছে। কিন্তু অনির পিসিমা? পিসিমার চারপাশে তো নো-ম্যান’স ল্যান্ড, ঠিকুজির কাঁটাতার ডিঙিয়ে যাবে, কার সাধ্যি ?
ইতিমধ্যে অনির কাছেই খবর পেলাম, এই তো সে দিন দেবুদা এসেছিল একটা সুন্দরী মেয়ের ফোটো নিয়ে। দেবুদা মানে দেবব্রত ভট্টাচার্য আমাদের পাড়ার পুরুতমশাই, ঘটকালি করা তার সাইড-বিজনেস। ওর কাছে এত রকম পাত্রীর ঠিকানা আছে যে, যে কোনও ম্যাট্রিমনি ডট কমও হার খেয়ে যাবে। তাই বোধ হয় পিসিমাও তাকে রাস্তায় দেখতে পেয়ে অনির পাত্রীর কথাটা পেড়েছিলেন।
দু’দিনের মধ্যেই দেবুদা হাজির হল বটে, কিন্তু তার যা অভিজ্ঞতা হল তা তার ঘটকালি প্রফেশনে একটা মাইলস্টোন থেকে যাবে। দেবুদা পিসিমার সামনে এসে বসতে না বসতেই পিসিমা জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘ঠিকুজি এনেছ?’’
দেবুদা বলল, ‘‘সে তো আনবই, আগে পাত্রী পছন্দ করুন তো! এ মেয়ে বেশি দিন পড়ে থাকবে না। যেমন রূপ, তেমন গুণ।’’
পিসিমা থামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘‘ও সব কথা থাক। আগে ঠিকুজি নিয়ে এস।’’
‘‘সে কী! আগে ফোটো দেখুন, দরকার হলে মেয়েকে এক বার দেখুন, তার পর তো ঠিকুজি কুষ্ঠি!’’
‘‘ও সব চালাকি এখানে চলবে না। আগে নিয়ে এস, তার পর
অন্য কথা।’’
দেবুদা যতই এক এক করে লুজ় বল ফেলে, মেয়ে ফর্সা, সুন্দরী, গৃহকর্মনিপুণা, শিক্ষিতা ইত্যাদি, পিসিমা ততই প্রলোভন সামলে এক ভাবে ফরোয়ার্ড খেলে চলেন, ‘‘আগে ঠিকুজি চাই চাই চাই...’’
অবশেষে ক্লান্ত হয়ে দেবুদা মিউমিউ করে ক্ষোভ প্রকাশ করল, ‘‘বিয়ের কথাবার্তা এক বর্ণ না এগোলে কি কেউ ঠিকুজি-কুষ্ঠি দেবে? তবু দেখি চেষ্টা করে।’’
ঘটনাটা শুনে রঞ্জিনী তো হেসে খুন। আমার কিন্তু একটুও হাসি পেল না, বরং মনে হচ্ছিল ঝড়ের পূর্বাভাস। প্রথমত, বোঝা যাচ্ছে, পিসিমা এ বার জোরকদমে ভাবতে শুরু করেছেন অনির বিয়ের কথা। দ্বিতীয়ত, দেবুদা যে রকম লোক তাতে ঠিকুজি-কুষ্ঠি ম্যানেজ করে যে কোনও দিন চলে আসতে পারে। তৃতীয়ত, সেই কুষ্ঠিবিচারের রেজ়াল্ট যদি পজ়িটিভ হয় তা হলে তো সর্বনাশ। চতুর্থত, এখনই আমাকে ভাবতে হবে কী ভাবে নীপবীথির সঙ্গে বিয়ের কথাটা পাড়া যায়। পঞ্চমত, মামি-শাশুড়ি অর্থাৎ নীপবীথির মায়ের কাছ থেকে জোগাড় করতে হবে নীপবীথির ঠিকুজিটা। ষষ্ঠত, সেই ঠিকুজি বিচার নেগেটিভ হলেই তো দফারফা হয়ে যাবে! এতগুলো বিষয় মাথায় রেখে একটা উপায় বার করা কি চাট্টিখানি কথা! কাজকম্ম গোল্লায় যেতে বসল। দূর ছাই বলে ফেলেও দিতে পারছি না। এক দিকে মাইডিয়ার বন্ধু, অন্য দিকে মাই ডিয়ার শ্যালিকা। দু’জনেই এখন আমার শরণাপন্ন। এ বলে, ‘‘একটা কিছু কর বন্ধু’’, ও বলে, ‘‘বাঁচান জামাইবাবু।’’ না, এক রাত না ঘুমিয়ে প্ল্যানটা ছকেই ফেললাম। রঞ্জিনীকে বললাম, অনি আর নীপবীথির পূর্বরাগের ব্যাপারটা ওদের মায়েদেরকে জানিয়ে রাস্তাটা একটু পিচ্ছিল রাখতে। সেই মেয়েলি কায়দাটা একমাত্র মেয়েরাই পারবে। আর, আমি নিলাম পিসিমার ঠিকুজি-প্রতিজ্ঞার মুখোমুখি হওয়ার ভার। তবে শিখণ্ডী হয়ে নয়, অস্ত্র হাতে নিয়ে।
প্রথমেই মোহনবাগান লেনে গিয়ে কড়া নাড়লাম শ্রীবিশ্বামিত্র নামে বহু-বিজ্ঞাপিত জ্যোতিষীর দরজায়। এই বিশুও আমাদের ক্লাসমেট ছিল। মাধ্যমিক তিন বারে পেরিয়ে জ্যোতিষশাস্ত্রের কোর্স করে অনেকগুলো আচার্য, শাস্ত্রী ইত্যাদি নানান রকম ডিগ্রি-উপাধি জোগাড় করে ফেলেছে। এত দিন পরে সহপাঠীকে পেয়ে অতি উচ্ছ্বাসে ঋষির গম্ভীর খোলস ছেড়ে বেরতে দেরি হল না।
ক্রমশ পেশ করলাম আমার সমস্যাটা। সেটা তারই আর এক সহপাঠীর সমস্যা জেনে তো ঘোঁত করে একটা অবহেলাসূচক শব্দ বার করল। বলল, ‘‘ছোঃ, এটা আবার সমস্যা? অনির ঠিকুজি নিয়ে আয়, না হলে অনির জন্মসময়টা হলেই হবে, আমি ঠিকুজি করিয়ে নেব। তার পর এমন একটা ঠিকুজি নামিয়ে দেব যে আচ্ছা আচ্ছা জ্যোতিষীরা ঘোল খেয়ে যাবে। তবে তার জন্য পাত্রীর ভেজাল জন্মসময়টা কয়েক মাস এ দিক-ও দিক হয়ে যাবে। সেটা একটু মেয়ের বাবা-মাকে বলে রাখিস, যাতে আসল বয়স না বলে বসে।’’ কিছুতেই টাকা নিতে চাইল না বিশু। বলল, ‘‘বিয়ে ঠিক হলে একটা গিফট পাঠিয়ে দিস।’’
সব কিছু ঠিকঠাক চলতে লাগল। অনি তার মায়ের কাছ থেকে জন্ম সময় ও তারিখ জোগাড় করে আনল। রঞ্জিনী গিয়ে নীপবীথি আর অনির মাকে পূর্বরাগের কথাটা গুছিয়ে বলে এল। অনির আসল ঠিকুজি আর নীপবীথির দু’নম্বরি ঠিকুজি দু’দিনে তৈরি হয়ে গেল। একেবারে গরম-গরম কম্পিউটার থেকে প্রিন্ট করা। এ বার রিং-এ উঠলাম আমি। দু’হাতে দুটো বক্সিং গ্লাভস— একটা অনির আর একটা নীপবীথির ঠিকুজি। অনিদের বাড়িতে গিয়ে পিসিমাকে প্রথমেই ঢিপ করে একটা প্রণাম করে ফেললাম। আমি একটু নিচু হতেই পিসিমা বললেন, ‘‘থাক থাক।’’ আমিও যথারীতি হাত সরিয়ে নিয়ে সোজা হয়ে উঠতে পারতাম, যেমন বিজয়ার পরে করি। কিন্তু এ বার সত্যি সত্যি পায়ে হাত দিয়ে দিলাম। পিসিমা খুব খুশি। এর পর শুরু হল আমার বকবক। ‘সেই ছোট বেলায় পিসিমার হাতে আলুর দম খেয়েছি, এখনও ভুলিনি’ থেকে শুরু করে ‘অনি এতটা ভাল ছেলে হয়েছে, সে তো আপনার আদর্শেই’ পর্যন্ত। পিসিমা তো গলে জল। এ বার এসেছে সেই ব্রাহ্ম মুহূর্ত। আসল কথা পাড়তে হবে।
‘‘পিসিমা, অনির এ বার বিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন কি?’’
‘‘হ্যাঁ বাবা, ভাবছি তো, তোমরাও দেখো না।’’
‘‘যদি অভয় দেন তো একটা কথা বলব?’’
‘‘হ্যাঁ, বলো না।’’
‘‘রঞ্জিনীর মামাতো বোনকে আপনার মনে আছে? নীপবীথি?’’
একটু চোখ বুজে ভেবে নিয়ে পিসিমা বললেন, ‘‘ও, হ্যাঁ হ্যাঁ, এই তো গতবার অষ্টমীর দিন একসঙ্গে বসে ভোগ খেয়েছি না? আমার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করল। বেশ মিষ্টি দেখতে। তা, এখন কী করছে?’’
‘‘এম এ পাশ করে রিসার্চ করছে। খুব ভাল মেয়ে। আমি বলছিলাম কী, অনির সঙ্গে বেশ মানাত।’’
‘‘ও, তাই বলো, ঘটকালি করতে এসেছ।’’ বলেই হাসতে হাসতে তাঁর লুকানো অস্ত্রটা বার করলেন।
‘‘বেশ তো ওর ঠিকুজি করা আছে কি? এক বার নিয়ে এসো না!’’
ঠিক এই মুহূর্তটার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম, দিলাম ট্রিগারটা টিপে, ‘‘এই তো এনেছি, পিসিমা। এটা হল অনির, আর এটা হল নীপবীথির।’’
পিসিমা দুটো কুষ্ঠি হাতে নিয়ে একটু নেড়েচেড়ে দেখে অনির কুষ্ঠিটা আমার হাতে দিয়ে বললেন, ‘‘এটা লাগবে না।’’
আমার উত্তর রেডি ছিল, ‘‘জানি পিসিমা, অনিরটা আপনাদের কাছে আছে। তবে সেটা তো আদ্যিকালের, তখন হাতে গণনা হত। অনেক ভুল থাকতে পারে। এখন কম্পিউটারে নির্ভুল গণনা হয়। তাই অনিরটাও করিয়ে নিয়েছি। জন্ম তারিখ, জন্মসময় মিলিয়ে নিন না, দেখুন ঠিক আছে কি না।’’
‘‘না না সে জন্য নয়। আসলে, অনির সঙ্গে তো বিচার করাব না!’’
‘‘সে কী! তা হলে কার সঙ্গে?’’
‘‘আমার সঙ্গে।’
‘‘অ্যাঁ?’’
‘‘হ্যাঁ, আমি তো পিসশাশুড়ি হব, তাই।’’
‘‘মানে?’’
‘‘জানো তো বাবা, সংসারে যত অশান্তির মূলে শাশুড়ি-বৌমার মন কষাকষি। এক বার শুরু হলে রোজই খটাখটি লাগে আর ঝনঝন করে বাজে। তার উপর যদি পিসশাশুড়ি হয় তা হলে তো এক রামে রক্ষে নেই, সুগ্রীব দোসর। স্বামী-স্ত্রীর ঝামেলার থেকে এই অশান্তির ঝাঁঝ আরও অসহ্য। ছেলেদেরও অশান্তির চূড়ান্ত হয়। তাই আমার গুরুদেবকে দিয়ে ভাবী বৌমার সঙ্গে আমার সম্পর্কটা আগেভাগেই একটু ঝালিয়ে নিতে চাই। তোমাদের আপত্তি নেই তো?’’
আপত্তি! এমন বিপত্তির উৎপত্তি হবে কেউ ভেবেছিল? কথায় বলে, অতি চালাকের গলায় দড়ি! সে দড়ি যে আমাকে গলায় পরতে
হবে, ভাবিনি।