Abosar

মেক ওভার

রাজশ্রী বসু অধিকারী

প্রতিদিনের মতো আজকেও একই সময়ে বের হয়েছিলাম। কপাল খারাপ। রিকশা, অটো, টোটো কিচ্ছু পাইনি হাতের কাছে। আমার চরম অশান্তিজনক মুহূর্তে বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিল ভজা। চেপে পড়েছিলাম ওর লরঝড়ে বাইকের পিঠে। ভজার মাথায় একটা ভাঙা ফাটা খেলনা টুপির মতো হেলমেট ছিল। আমার তো তাও নেই, থাকার কথাও নয়। বেশি কথা বলার সময় ছিল না। ভজার কোমড় জাপটে ধরে বললাম, “রবিতীর্থর মোড় চল। জলদি, পাঁচ মিনিট আছে আর।’’ ভজা যতই বাবার পয়সায় রোয়াব দেখানো বখে যাওয়া মলাটের হোক, আদতে আইন মেনে চলতে চাওয়া বাধ্য পুরুষ। আমাকে নিয়ে এগোতে থাকলেও মিউমিউ করতেই থাকে, “তুই হেলমেট পরিসনি... এটা তো একটা গণ্ডগোল হয়ে গেল। আমি ভাই ‘সেভিং ড্রাইভ সেফিং লাইফ’ মেনে চলি! তোকে তো এর পরের সিগনালেই পুলিশে ধরবে রে! তার চেয়ে তুই এখানেই নেমে যা!  নাম মাইরি। কেন আমাকেও ফাসাবি?’’ ভজার কথায় কান দেওয়ার সময় নেই আমার। একবার শুধু ওকে শুধরে দিয়ে বলি, “তোর ‘সেভিং’ আর ‘সেফিং’ শুনলেও কিন্তু পুলিশে ধরবে। ওটা ‘সেফ’ আর ‘সেভ’ হবে।’’

আমার কথায় পাত্তা না দিয়ে  ভজা বলল, “কিন্তু কুন্তল, তুই নাম ভাই, আমার ফাইন হয়ে যাবে। এখানে দাঁড়া, এখনই অটো পেয়ে যাবি।” ভজার জ্ঞানের বাণী চলতেই থাকে, “শোন ভাই, একটা কথা বলি, যতই তুমি দাঁড়িয়ে ঝাড়ি মারো কোনও লাভ নেই। যতক্ষণ না তোমার হুলিয়া পালটাচ্ছে, এক নম্বর কেরিয়ার নিয়ে বা রেজাল্ট নিয়েও কোনও মেয়ের হৃদয়ে দাগ কাটতে পারবে না। আরে বাবা, পহলে দর্শনধারী? চেহারাটা তোর ভাল, কিন্তু চুল? ড্রেস? ছ্যা!’’

ওর কথা শুনে এই টেনশনেও রেগে উঠি, ‘‘কেন রে এমন খারাপ দেখচ্ছিস আমার মধ্যে? ভালবাসা অন্তরের ব্যাপার। সেখানে বাইরের চেহারার কোনও মূল্য নেই।’’ আমার রাগকে একটুও পাত্তা না দিয়ে বাইকের স্পিড আরও খানিকটা কমিয়ে হা হা করে হেসে ওঠে ভজা। আমার নিজের ওপরই ভয়ানক রাগ হয়। কোনও এক দুর্বল মুহূর্তে ভজার মতো বোকা ছেলের কাছে নিজের মনের কথা খুলে বলে ফেলেছিলাম বলে। কিন্তু ছোঁড়া ঢিল তো আর ফেরত আসে না। আপাতত আমায় তাড়াতাড়ি পৌঁছোতেই হবে।

আমি ভিতরে ভিতরে ছটফট করছি। ইস! আর তিন মিনিট। পিক আপ বাসটা ঠিক কাঁটায় কাঁটায় সাড়ে ন’টাতেই ছাড়ে রবিতীর্থ মোড় থেকে। দু’দিকে বিশাল বিশাল ফ্ল্যাটের কাঠামো আর ধু ধু মাঠ। সত্যি, আমার বাবা একখানা বাড়ি করেছিল বটে। সেই কোন গোবিন্দপুরে। আমার বুকের ভিতরে সলমন খানের টিউবলাইট জ্বলে নেভে। চলে গেল নাকি! ছেড়ে গেল বাস আমার? দিনের শুরুতে রাত্রি নামিয়ে?

একচোখ ছোট করে আর একচোখের ওপর হাত ঢাকা দিয়ে হুউস করে চলে যাওয়া অজস্র গাড়ির ফাঁক দিয়ে দেখার চেষ্টা করি। পুলিশের ভয়ে ভজা বেশি স্পিড তোলে না। দূরে দাঁড়ানো তিন জন ট্রাফিক পুলিশকে দেখে ভজা থেমে গেল। আমি প্রায় ফুট কুড়ি তফাতে, আর বাসটা আমার চোখের সামনে দিয়ে ছেড়ে চলে গেল। আর একটু আগে কেন ভজাকে এই পৃথিবীতে পাঠালে না হে ভগবান! গ্রহ নক্ষত্রের সামান্যতম বদলের ফলেই হয়তো ও আর একটু স্পিড তুলতে পারতো, ভয়টা আর একটু কম হত, আরও একটু সহৃদয় হয়ে আমাকে ওই বাসটার কাছেই নামিয়ে দিত পুলিশের ভয় অগ্রাহ্য করে। না হয় ওর হয়ে ফাইনের টাকাটা আমিই দিতাম!

ভাবছি, দুঃখে ভারাক্রান্ত হব নাকি হতাশায় হাফশোল বুকে নিয়ে উদাস হয়ে পা চালিয়ে কিছু দূরের নতুন অফিস বিল্ডিং এর সামনে দাঁড়ানো বিশাল বিচার মূর্তির সামনে ওয়েট করব। যদি আমার বন্ধু পরিমল, ও ওখানকার ক্লার্ক, আমার মিসকল দেখতে পেয়ে বেরিয়ে এসে বিনা পয়সার কফি টোস্ট খাওয়ায়! যদি ওদের ক্যান্টিনে নিয়ে যায়। যেমন আগেও বহুবার এমন হঠাৎ মন খারাপের দিনেও নিয়ে গিয়েছে।

আমি এক মুহূর্তে উদ্দেশ্যহীন সকালটাকে নিয়ে কীভাবে খরচ করব কিছুই ঠিক করতে পারছি না। বুঝতে পারছি না এখন আবার নতুন করে নিজের কর্মক্ষেত্রের দিকে জার্নি শুরু করাটা আমার ল্যাদ খাওয়া মনের পক্ষে কতটা স্বাস্থ্যকর হবে, ঠিক তখনই কানের পাশে সুরেলা নারী কণ্ঠ, “ইসস আপনিও পেলেন না বাসটা? আমিও আজ কয়েক সেকেন্ডের জন্য মিস করলাম।’’

 দিনে দুপুরে মাঝ সকালে আমার চোখের সামনে চাঁদের আলো রঙের মেখলা তাতে হাজারবুটি তারার ফুল তোলা ওড়না। একপিঠ দামাল মেঘের আলপনা আঁকা চুলের বন্যা, করমচা লাল ঠোঁটের ফাঁকে অস্ফুট কিছু শব্দ, চাঁপার কলি আঙুল বেয়ে সুরের ঝরনা তোলা কিছু গান, সব টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে পড়ে তিন রাস্তার মোড় ভিড় করে থাকা অজস্র গাড়ির জ্যাম বেয়ে।

আমি বোধহয় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম মানে সজ্ঞান অচেতনার আনন্দময় আকাশে অজ্ঞান বিচরণ। এটা সেই ঘুম, যখন আমি সেই স্বপ্নটাই দেখতে পাই যা আমি দেখতে চাই। যে স্বপ্নের আকাশে আমার মাথার ওপরে কেউ নেই, শুধু আমি এক সম্রাট। যেখানে আমার স্বপ্নের নারী শুধু আমারই জন্য ওড়নার প্রান্ত দাঁতে কাটতে কাটতে উদগ্রীব অপেক্ষার চোখে তাকিয়ে থাকে জানলার বাইরে। আঙুলের খোঁচা খেয়ে জ্ঞান আসে।

ফেড জিনস আর অফ হোয়াইট টপ পরা অরুনিতা কাঁধছাঁটা পিঙ্ক থ্রেডেড চুল নাচিয়ে বলে, ‘‘যাবেন তো অফিস? চলুন, একটা ট্যাক্সি নিই, শেয়ারে হয়ে যাবে।’’ ঘুম ভাঙা চোখে তাকিয়ে লজ্জায় মরে যাই আমি। যার জন্য তিনভুবন বাজি রেখে বসে আছি, যাকে দিয়ে দিতে পারি অর্ধেক আকাশ আর সম্পূর্ণ মাটি, সে কিনা বলে ‘শেয়ারে হয়ে যাবে।’ মুখ থেকে একটাও কথা খসানোর আগেই অরুনিতা হাত তুলে দাঁড় করিয়ে ফেলেছে একটা ট্যাক্সি। ঝপ করে নিজে উঠে বসে আমার জন্য অর্ধেকের বেশি জায়গা ছেড়ে রেখে তাকায়, “কুইক...কুইক, সিগন্যাল দিয়ে দিয়েছে।” বলতে বলতে ভেবলু হয়ে যাওয়া আমাকে হ্যাঁচকা টেনে তুলে নেয় পাশে। “এই ভাই, চলুন চলুন। ক্যামাক স্ট্রিট, জলদি!” ড্রাইভারকে কথাগুলো বলে একবার আমার দিকে তাকিয়ে ওর সেই বিখ্যাত কুন্দফুল হাসিটা হাসে।

আর, এরকম একটা অভাবনীয় মুহূর্তে আমি ক্রমশ আরও ভ্যাবলা হয়ে যেতে থাকি মনে মনে। গত চার মাস ধরে এই মেয়েটার সঙ্গে হাজারবার চেয়েও একটাও কথা বলতে পারিনি নিজের থেকে। পাশাপাশি কেবিনে বসে কাজ করে, একবাস এ ক্যামাক স্ট্রিট টু রবিতীর্থ যাতায়াত করে, একসঙ্গে বসের সামনে ডেপুটেশন দিতে গিয়ে অথবা একই অফিস পিকনিকে গিয়েও সম্পর্কটা একবিন্দুও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারিনি। নিজে থেকে গিয়ে কিছু বলব ভাবলেই আমার হাঁটু কেঁপেছে, জিভ শুকিয়েছে, বুক ঢিপঢিপ করেছে। অথচ চার মাসের একটি মুহূর্ত এমন যায়নি যে আমি ওর কথা ভাবিনি। বাড়ির গাড়ি ছেড়ে দিয়ে পড়িমড়ি করে এসে সাড়ে ন’টার বাস ধরতে শুরু করেছি। যে দিন থেকে জেনেছি এই অফিসের এই পিকআপ বাসে অরুনিতা যায়। প্রতি দিন শুধু মনে মনে কথার জাল বুনে গিয়েছি, কী কী ভাবে ওকে ডাকব, কী ভাবে নিজেকে প্রকাশ করব। কিন্তু অশ্বডিম্ব প্রসব ছাড়া কিছুই পারিনি। আর সেই অরুনিতা আমার পাশে, একই ট্যাক্সিতে, একহাতের মধ্যে। আমার বুকের ভিতর বেজে চলা অর্কেস্ট্রা থামতে চাইছে না। আমার চোখের ওপর দিয়ে একে একে পার হয়ে যাওয়া নিক্কো পার্ক, চিংড়িহাটার মোড়, মা উড়ালপুলের অনবদ্য নান্দনিক আকাশযাত্রা। সব যেন নন্দনকাননের অংশ। যেখানে এক মাত্র অপ্সরা অরুনিতা। আর আমি মহারাজ ইন্দ্র। ট্যাক্সিতে চেপেও স্বর্গীয় আনন্দে ভাসছি। আর এরকম একটা বিশেষ মুহূর্তে আমার বড্ড বেশি করে মনে পড়ছে ভজাকে। ভাগ্যিস আজকে ওর জিরো স্পিড মোটর সাইকেলে চেপেছিলাম! আর একটু আগে এসে রবিতীর্থর মোড়ে পৌঁছালে কী হত তা আমি আর কল্পনাই করতে চাইছি না। ভগবান নামের অদেখা ভদ্রলোকটি দেখছি সত্যিই ভালর জন্যই কিছু কিছু কাজ করে ফেলেন। এই যেমন আজ আমার অটো বা টোটো না পাওয়া।

একটি ঝংকারে আমার চিন্তাসূত্র কেটে যায়। অরুনিতা কানের পাশে মুখ নিয়ে এসে চরম অবিশ্বাস্য কিছু কথা বলে যাচ্ছে। আর সেই সঙ্গে আমার হাঁ হয়ে যাওয়া মুখের দিকে তাকিয়ে আছে উত্তরের আশায়। কী বলব আমি ভেবে পাই না। কথাগুলো ভাল না মন্দ, এটা আমার মাথায় আসে না। বক্তব্যসমূহের বিষয়বস্তু ও তার অভিনবত্ব আমাকে হতভম্ব করে রেখেছে ।

“চুলে তেল দেওয়া ছেলে আমি একদম দেখতে পারি না, জিনসের প্যান্টের সঙ্গে কাবলি শু একেবারে আদা আর কাঁচকলা, ক্যান্টিনে পাশের কলিগকে অফার না করে একা একা লাঞ্চ করাটাও ব্যাড ম্যানার্স, নখে অনেক ময়লা থাকে, যেগুলো দাঁত বেয়ে পেটে চলে যায়। তাই মিটিং রুমে দাঁত দিয়ে নখ না কাটাই ভাল।’’

আমি চুপ। ট্যাক্সি আপন গতিতে শেক্সপিয়ার সরণিতে। মনে হচ্ছে এই রাস্তায় জীবনে প্রথম এলাম। এমন ব্যাকুল চোখে বাইরের দৃশ্য দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। কানের কাছে এবার বোমা ফাটে।

“দিনের পর দিন বেফালতু সময় নষ্ট করতে লজ্জা করে না আপনার? আজ নিয়ে চার মাস দশ দিন হল ড্যাবড্যাব করে শুধু দেখে যাচ্ছেন, অ্যাকশন নিতে এত দেরি হলে চলবে? আজকের দিনটাও তো মিস করছিলেন আর একটু হলে!”

একেবারে সোজাসুজি আক্রমণ। ওর জন্যই যে ছুটতে ছুটতে এসে বাস ধরছি সেটা যে ও জানে বা বোঝে সে কথা আমি তো অন্তত কোনওদিন বুঝতেই পারিনি। দিনের পর দিন আমার নিচু করে থাকা চোখের দৃষ্টি! সেটাও তো ওর চোখ এড়ায়নি। কিন্তু এখন কী বলে সামলাব এই উত্তপ্ত পরিবেশ? এত গুলো সত্যি অভিযোগের একটা উত্তর চাই। মনের মধ্যে শব্দাবলীর ভাণ্ডার, কিন্তু জিভ যেন পাথর, নড়তেই চাইছে না। না... ভজার সঙ্গে আর কথাই বলা চলবে না। কে না জানে অসৎ সঙ্গে নরকবাস। আমার ব্রেনটাও দিন দিন ভজার মতোই হয়ে যাচ্ছে। সমস্ত ডিবেটিয় শার্পনেস কোথায় হাওয়া হয়ে গিয়েছে।

“কী ব্যাপার? আপনি বোবা না কি ডিসকার্টিয়াস? একজন মহিলার প্রশ্নের যে উত্তর দিতে হয় সেটাও জানেন না? আপনি এখানেই নেমে যান। আমি এরকম ছেলের সঙ্গে যাব না।’’ মুহূর্তের মধ্যে ভয়ংকর রেগে ওঠে অরুনিতা, “এই এই ভাই... দাঁড়ান... দাঁড়ান তো এইখানে...” ট্যাক্সি থামা মাত্র এক ঝটকায় দরজা খুলে দেয় হাত বাড়িয়ে। আগুন ঝড়ানো চোখে তাকায় আমার দিকে, “নামুন... এক্ষুনি নেমে যান, যাবই না আপনার সঙ্গে। এত ক্ষণে মাথায় গেঁড়ে বসে থাকা ভজার প্রভাব কাটিয়ে বলতে চেষ্টা করি, “আরে ... আমি ... আমি...মানে...’’ বলতে বলতে নেমেও আসতে হয়। কারণ পিছনের গাড়ি প্রবল আর্তনাদ করছে।

“আমি কিছু শুনতে চাই না ... চার মাসে যে ছেলে চার পয়েন্ট এগোতে পারে না সে একটা ডিসগাস্টিং!’’ দমাস করে আমার মুখের ওপরে বন্ধ হয়ে যায় ট্যাক্সির দরজা। চলে যাওয়া হলুদ স্বর্গ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আমি নিজেকে আবিষ্কার করি শেক্সপিয়ার সরণি আর ক্যামাক স্ট্রিটের ক্রসিংয়ে। মাত্র দশ মিটার দূরে আমাদের বারোতলা অফিস বিল্ডিংটা দেখা যাচ্ছে। আর আমার ঠিক বাঁ দিকেই একটি বিখ্যাত পার্লার উইথ গ্রুমিং অ্যান্ড মেক ওভার সেন্টার, যেটা স্পেশ্যালি কলকাতা শহরের পুরুষদের সাজিয়ে তোলার জন্যই দাঁড়িয়ে আছে বুকে ব্যাজ ঝুলিয়ে।

ভজার অযাচিত উপদেশ মনে পড়ে যায়। ওর ঢ্যালঢেলে মুখ নিঃসৃত সকালবেলার অমৃতবাণী এভাবে ফলে যাবে ভাবিনি। আমি মানতে বাধ্য হই, এমনকী ভজারও নারীজাতি সম্বন্ধে যা জ্ঞান আছে আমার তা নেই। মোবাইলে টাইম দেখি, সাড়ে দশটা প্রায়। দেড়টায় লাঞ্চ আওয়ার। অরুমিতা দু’তিনজন কলিগকে নিয়ে মাঝেমধ্যে অফিসের নীচের সাউথ ইন্ডিয়ান রেস্তরাঁয় খেতে আসে জানি। কেন যেন মনে হল, আজকে ধোসা খেতেই ইচ্ছে করবে মেয়েটার।

তিন ঘণ্টা অনেকটা সময়। মনে মনে বার কতক ভজা ভজা স্মরণ করে, তেল চুকচুকে পাটপাট নিভাঁজ মাথাটায় শেষবারের মতো হাত বুলিয়ে ‘যাব কী যাব না’, ভঙ্গীতে  ওই পার্লারের পেল্লায় কাঁচের সুইং ডোরটা ঠেলে ঢুকেই পড়ি ভিতরে। কারণ আর কখনও আমায় মাঝরাস্তায় নামলে চলবে না। কারণ ভালবাসার জন্য যেতে হয় যদি যাব লক্ষ যোজন... কার কবিতা জানি না। হবে কারও একটা। আমার কাছে বড়ই মনোগ্রাহী লাইন এইমুহূর্তে।

কারণ... ভজার পরামর্শ আমার অনেক আগেই শোনা উচিত ছিল।