Abosar

ফটোশপ

সুতপন চটোপাধ্যায়

আইডিয়াটা কার?’’ জিজ্ঞেস করল রিমা।

‘‘স্টুডিয়োর ছেলেটার,’’ উত্তর দিল অনুপম।

‘‘তুমি নিজে চোখে দেখেও ছবিটা বাড়ি নিয়ে এলে?’’

‘‘কেন? বেশ তো লাগছে! জমিদার-জমিদার।’’ 

‘‘ইশ্শ! বাবাকে মোটেই এমন দেখতে ছিল না!’’ রিমার চোখে রাগ।

‘‘আরও জমকালো হলে ভাল হত। আমার বাবাকে এই রকম দেখতে ইচ্ছে করে। এতে দোষ কোথায়?’’

আর কথা বাড়াল না রিমা। লাভ নেই। রান্নাঘরে চলে গেল সে। 

 

অতনু হোয়াটসঅ্যাপে ছবিটা পাঠিয়েছে অনুপমকে। স্টুডিয়োর ছেলেটা ফোন থেকে ডেস্কটপে টেনে নিতেই জরাজীর্ণ অবিনাশ ব্যনার্জি ভেসে উঠেছিলেন স্ক্রিন জুড়ে। অনুপম বলল, ‘‘ছবিটা ভাল করে তৈরি করতে পারবে?’’

ছেলেটি ছবিটার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘‘কী রকম করতে চাইছেন? রাজা না জমিদার? ফটোশপে সবই করা যাবে।’’

অনুপম ভাবল এক মিনিট। তার পর বলল, ‘‘জমিদারের মতো করে দাও। আর ল্যামিনেশন হবে।’’ 

সপ্রতিভ ছেলেটি ঘাড় নাড়ল, ‘‘আজকাল ল্যামিনেশনই হয়। আগেকার মতো কাচ-ফ্রেম আর কেউ নেয় না।’’

অনুপম বলল, ‘‘বাবার ছবি। যত্ন করে করতে হবে কিন্তু।’’

দোকানের ছেলেটি মুচকি হাসল।

     

ঠিক তাই। ছবিটা নিতে এসে চমকে উঠেছিল অনুপম। জলজ্যান্ত অবিনাশ ব্যনার্জি। সিংহাসনে বসে, মাথার উপর চাঁদোয়া, পিছনে ঝলমলে পর্দা, পরনে গিলে করা পাঞ্জাবি, গলা থেকে বুক অবধি জরির কাজ। গলায় সোনার চেন। মাথাভরতি চুল, দু’পাশে পাট করে আঁচড়ানো। কাঁধ থেকে ঝুলে আছে গৈ্রিক উত্তরীয়। যৌবনে কি অবিনাশ এমনই দেখতে ছিলেন? ভাববার চেষ্টা  করল অনুপম। হয়তো ছিল। স্টুডিয়োর ছেলেটি জিজ্ঞেস করল, ‘‘কী, ঠিক লাগছে তো?’’

‘‘দারুণ করেছ!’’ খুশি প্রকাশ করল অনুপম। বাবার শুকনো চেহারা কোনও দিন পছন্দ ছিল না তার। এখন বেশ দেখাচ্ছে। সারা শরীরে দারিদ্রের কোনও ছাপ নেই।   

আগামী কাল অবিনাশের মৃত্যুদিন। বাবার জন্মদিন অতনুও জানে না, অনুপমও নয়। মাকে অনেকবার জিজ্ঞেস করেছিল। মা হয়তো বলতে পারেনি। তাই এই দিন বাবাকে স্মরণ  করে দুই ছেলে। প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের নতুন বাড়িতে এবার প্রথম। 

কতুলপুর গ্রামের হাটতলায় একটা দর্জির দোকান ছিল অবিনাশ ব্যনার্জির। আর ছিল রেডিমেড জামাকাপড়ের ব্যবসা। সপ্তাহে দু’দিন হাট বসে। তাতে রেডিমেড  কাপড় বেচতেন। বাকি দিনগুলো সেলাই মেশিনের প্যাডেল চালিয়ে সংসার চালাতেন। সকাল দশটা থেকে রাত দশটা অবধি পরিশ্রমের শেষ ছিল না। একবার লুঙ্গি সেলাই করতে গিয়ে হাতের আঙুলে একটা ছুঁচ ঢুকে মট করে ভেঙে যায়। গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার ছুঁচটা বার করতে না পারায় সেপটিক হয়ে যায়। চিকিৎসা করাতে বহুবার আরামবাগ গিয়েছিল অনুপম। শেষমেষ বেসরকারি নার্সিং হোমে অপারেশন করে আঙুলটাবাদ দিতে হয়েছিল। অনেক দিন হাসপাতালে ছিলেন অবিনাশ। আরও জটিলতা ছিল। অনেক খরচ হয়েছিল। সেজমামা দিয়েছিল সব। সারা জীবন একটু একটু করেও পুরো শোধ করতে পারেননি অবিনাশ। বাকিটুকু অনুপম চাকরির প্রথম ছ’মাসে শোধ করে। অবিনাশ সে কথা জেনে যেতে পারেননি। 

ছেলেটার এলেম আছে। ছবিটার দিকে তাকিয়ে অবাক হল অনুপম। দু’টো গাল এমন করেছে মনে হচ্ছে অবিনাশের দু’টো পাটির সব দাঁত অটুট ছিল। কপালের উপর ট্রাম লাইনের মতো বলিরেখা নেই, যেন কোনও দিন কোনও চিন্তাই ছিল না তাঁর। অনুপমের মুখের আদল অনেকটা অবিনাশের মতো। তাই নিজের মুখটাও চিরকাল এমনই থাকুক তাই সে চায়। গত দশ বছরে তার চেহারা ভারী হয়েছে। ধাপে-ধাপে উন্নতি করে সে এখন তার বেসরকারি কোম্পানির পূর্ব ভারতের কর্ণধার। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরে একটা বড় প্রমোশন হব-হব করছে। প্রিন্স আনোয়ার শা রোডের ফ্ল্যাট থেকে তাই কতুলপুর এখন অনেক-অনেক দূর। 

 

বিল ক্লাস সিক্সে ভর্তি হয়েছে নামী বেসরকারি স্কুলে। নিচু ক্লাস হলেও লেখাপড়ার খুব চাপ। একটা আলাদা পড়ার ঘর দরকার। তাই রিমা বিলের ঘরের এক দিক জুড়ে বানিয়েছে বইয়ের আলমারি। ছবিটা আসার পরে কিছুক্ষণ তর্ক বেঁধে গেল অনুপম ও রিমার। রিমা ঠিক করেছিল ছবিটা নতুন বইয়ের আলমারির উপর রাখবে। সেখানে রাখলে অবিনাশ তার প্রিয় নাতির দিকে সারাক্ষণ তাকিয়ে থাকবেন। বিলের তাতে ভাল হবে। তাই রিমা ছবিটা আলমারির উপর রাখতেই অনুপম গেল রেগে। বলল, ‘‘কী যে উল্টোপাল্টা কাজ করো, আমাদের ড্রয়িং রুমের সামনের টেবিলে ছবিটা রাখো। সব সময় সবার চোখে পড়বে।’’

‘‘ওখানে রেখো না। কাজের মেয়েটা মেঝে মুছতে গিয়ে ফেলে দেবে। নষ্ট হবে ছবিটা!’’ রিমা বলল। 

‘‘আরে না-না, নষ্ট হবে কেন? এটা ল্যামিনেটেড। আগেকার দিনের কাচ-ফ্রেমে বাঁধানো নয়।’’

চুপ করে গেল রিমা। মনটা তার খুঁতখুঁত করছিল। খুব ছোট বেলায় বাবাকে হারিয়েছে। তাই বাবা ব্যাপারটা ঠিক কী জানা ছিল না। অনুপমকে বিয়ে করেই তার প্রকৃত পিতৃলাভ। ওকে নিজের মেয়ের চেয়েও ভালবাসতেন অবিনাশ। থাকতে চাইতেন রিমার কাছে। দেশের অনেক গল্প করতেন। শীতকালের গ্রাম নিয়ে গল্প করতেন। অনেক আক্ষেপ ছিল অবিনাশের, কিন্তু সব সময় হাসিমুখ। যে ক’দিন থাকতেন, সে ক’দিন বড় সুখের সময়। অসুস্থ হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন বাঁকুড়া হাসপাতালে। মৃত্যুসজ্জায় বারবার রিমাকে দেখতে চেয়েছিলেন। ছেলের স্কুল, পরীক্ষা, টিউশন, গিটারের ক্লাস, ক্যারাটের ক্লাসের চাপে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। সে কারণে একটা গোপন আক্ষেপ আছে তার। শেষ সময়টা কিছুদিন কাছে থাকলে ভাল হত। সপ্তাহে চারটে টিউশন বিলের। ক্লাস ছাড়াও অনলাইন কোচিং আছে। কেরিয়ার করতে হলে শুধু ইংলিশ মিডিয়ামই যথেষ্ট নয়। তাই এই বয়স থেকেই ট্র্যাকের স্টার্ট পয়েন্টে দাঁড়িয়ে আছে বিল। অনুপম দাঁড়িয়ে আছে হুইসল নিয়ে। যাতে বড় হয়ে বিলু অভিযোগ করতে না পারে। স্কুল থেকে বিলু ফিরে দেখল অবিনাশ তার বইয়ের আলমারির উপর। অনুপম অফিস থেকে ফিরতেই জিজ্ঞেস করল, ‘‘ছবিটা তুমি নিয়ে এসেছ?’’  

‘‘হ্যাঁ,’’ উত্তর দিল অনুপম। অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল ছবিটার দিকে বিল। তার পর বলল, ‘‘দাদু কোথাকার রাজা ছিল?’’

‘‘রাজা নয়, জমিদার।’’

‘‘কোথাকার জমিদার?’’ 

‘‘কতুলপুরের।’’  

‘‘শুধুই কতুলপুরের?’’

‘‘জমিদার এক জায়গারই হয়। তার অধীনে চল্লিশটা গ্রাম ছিল। আমবাগান, কলাবাগান...’’

‘‘ঘোড়াশালে ঘোড়া, হাতিশালে হাতি?’’ প্রশ্ন করল বিল।

‘‘ওসব রাজাদের থাকে। তবে আমাদেরও ছিল। ছোট সাইজ়ের।’’

‘‘আর কী ছিল?’’

‘‘একটা লেঠেলের দল। কেউ অন্যায় করলে কঠোর শাস্তি দিত, মানে পানিশমেন্ট।’’ 

রিমা দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে শুনছিল বাবা আর ছেলের কথোপকথন।

বিল এবার জিজ্ঞেস করলো, ‘‘তোমাদের গাড়ি ছিল?’’

‘‘হ্যাঁ ছিল।’’

‘‘কে চালাত?’’

‘‘ড্রাইভার চালাত।’’

রিমা ফিক করে হেসে ফেলল দরজার পাশে দাঁড়িয়ে। বিল তক্ষুনি একটু হিসেব করে দু’হাত ছড়িয়ে বলল, ‘‘আই অ্যাম দ্য গ্র্যান্ডসান অফ দ্য জ়মিনদার অব কতুলপুর।’’ তার বলার এই নাটকীয় ভঙ্গি দেখে তাকে এক টানে কোলে তুলে নিল অনুপম। গালে একটা চুমু খেয়ে মাথার চুল ঝাঁকিয়ে দিল জোরে।

 

লেক রোডের ফুলওয়ালা বলেছিল, রাতে একটু জল ছিটিয়ে রাখবেন। দেখবেন, ভোরবেলা একেবারে টাটকা ফুল। সারা বাড়ি গন্ধে ম ম করছে। ঠিক তাই। বিছানায় শুয়ে শুয়ে রজনীগন্ধার গন্ধ পেল অনুপম। ঘুম থেকে উঠে দেখল রিমা বসার ঘরে টেবিলের উপর ফুল দিয়ে সাজিয়েছে অবিনাশের ছবি। সামনে রেখেছে তাঁর পছন্দের চার রকমের নিরামিষ পদ। একটা প্লেটে পাঁচ রকমের সন্দেশ। দই ভালবাসত। ডান দিকে একভাঁড় মিষ্টি দই। গলায় সাদা রজনীগন্ধার মালায় সুসজ্জিত জমিদার অবিনাশ ব্যানার্জি তাকিয়ে আছেন। ঠিক যেমন জমিদাররা লক্ষহীন, অনুভুতিহীন মরা মাছের মতো তাকান। ধূপদানিতে ধূপ, পঞ্চপ্রদীপ প্রজ্জ্বলিত। ছবির সামনে নানা রঙের ফুল। ছবির সামনে দাঁড়িয়ে তিন জন নমস্কার করল। অজান্তে অনুপমের চোখে ভেসে উঠল ভাইস প্রেসিডেন্টর মুখ। কানে যেন শুনতে পেল, ‘প্রথম কোয়ার্টার টার্গেট তো মিস করেছেন, এবারের অবস্থাও ভাল নয়। হাফ ইয়ার্লি টার্গেট থেকেও অনেক দূরে। খেয়াল আছে তো? কী প্ল্যান আপনার?’ আর ঠিক তখনই দেওয়ালঘড়িতে ঢং ঢং শব্দে বাজল সাতটা। সাড়ে সাতটায় স্কুলের বাস আসবে বাড়ির গেটে। বিলকে তৈরি হতে হবে। রান্নাঘরের দিকে পা বাড়াল রিমা। টিফিনবক্সে টিফিন ভরে বেরিয়ে এল সে। ঠান্ডা লাগার ধাত বিলের। গিজ়ার চালিয়ে  বিলের মাথায় তেল মাখাতে-মাখাতে একবার অনুপমের দিকে চেয়ে বলল, ‘‘তুমি পাশের বাথরুমে চলে যাও।’’

আজ অনুপমকে তাড়াতাড়ি বেরতে হবে। মুম্বই থেকে ভাইস প্রেসিডেন্ট এসেছেন কাল রাতে। আজ দশটা থেকে টানা মিটিং।

দরজার নীচ দিয়ে খবরের কাগজ সুড়ুত করে ঘরে ঢুকে পড়লেই পাক্কা সাডে সাত। অনুপম মেঝে থেকে কাগজ তুলে সোফায় ছুড়ে দিলে বিল হাট করে খুলে দিল দরজা। গটগট করে বাড়ির বাইরে যেতে যেতে বলল, ‘‘বাই মাম্মাম।’’

অনুপম তাঁর পিছন পিছন বিলের ওজনের চেয়েও ভারী ব্যাগ ঘাড়ে করে এগিয়ে গেল লিফটের দিকে। বিল ধরে রেখেছে লিফট, নিমেষে দু’জন নেমে গেল নীচে। 

রিমা এই অবসরে অবিনাশ ব্যানার্জির সামনে দাঁড়িয়ে বিড়বিড় করে বলল, ‘‘বিলের ভাল করুন আপনি। ভাল করুন।’’

বাবার এই ছবিটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না রিমা। মনের মধ্যে খিচখিচ করেছে সারা রাত। অনুপমকে বলবে ভেবে ছিল রাতে শুয়ে। একজন মানুষের চেহারা সম্পূর্ণ বদলে দিয়ে তাঁকে স্মরণ করা— এ কেমন কথা? রাতে বসের ফোন আসতেই ল্যাপটপ নিয়ে বসে গিয়েছিল অনুপম। অনেক রাত অবধি। রিমা জানে, এ সময়ে কিছু বলা মানে অশান্তি ডেকে আনা। এতে হিতে বিপরীত হয়েছে দীর্ঘকাল। কোন লাভ হয়নি, উল্টে কথা শুনতে হয়েছে। তা ছাড়া কালকের দিনটা খুব বিশেষ দিন। এ বছরটা খুব একটা ভাল যাচ্ছে না। অনুপমের মুখে শুনেছে রিমা। বসের সঙ্গে মিটিংটা কেমন যায় তার উপর নির্ভর করছে সামনের প্রমোশন। অনুপম বলেছে একদিন রিমাকে। তাই রিমা আর বিশেষ আগ বাড়িয়ে বলতে চাইল না। দেখল কাজ শেষ করে রাত দু’টোয় শুয়ে পড়ছে অনুপম।

 

অফিসে বেরনোর আগে প্রতিদিন রিমাকে একবার জড়িয়ে ধরে অনুপম। রিমা তার টাইয়ের নটটা ঠিকঠাক জায়গায় সেট করে দেয় রোজ। আজও তাই। অনুপম দু’হাতে নিজের বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরলে রিমা অনুপমের বুকে মুখ লুকিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘‘ছবির আইডিয়াটা কার? তোমার, না স্টুডিয়োর ছেলেটার? সত্যি করে বলবে।’’

অনুপম বলল, ‘‘আমার।’’ 

‘‘তোমার? তবে মিথ্যে কথা বলেছিলে কেন?’’ ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল রিমা।

‘‘ইয়েস, আমার। কারণটা বোঝার চেষ্টা করো, বিলের এই বয়সটা খুব ক্রিটিকাল।’’ 

‘‘মানে?’’ 

‘‘মানে এই বয়স থেকে সমস্ত কিছু ওর মেমারিতে থাকবে। এই বয়েসে আশি পার্সেন্ট ব্রেন ডেভেলপ হয়ে যায়।’’

‘‘বুঝলাম না কী বলতে চাইছ।’’ 

‘‘আমি চাই না, বিল মনে রাখুক যে, ওর কোনও দিন পুয়োর ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল। দরিদ্র পরিবারের ছেলেরা ইনফিরিওরিটি কমপ্লেক্সে ভোগে। আত্মবিশ্বাসের অভাব হয়। পদে পদে ভয় পায় তারা।’’ 

‘‘তার সঙ্গে বাবার ছবির কী সম্পর্ক?’’ অবাক হয় রিমা। 

‘‘বাবার আগের ছবিটায় সর্বত্র দারিদ্রের ছাপ। আমি চাই না বাবার ওই রুগ্ণ হাড়সার গরিব চেহারাটা মনে রাখুক বিল। ওকে অনেক বড় হতে হবে। আমার চেয়েও বড়।’’  

বিস্মিত চোখে অনুপমের দিকে তাকাল রিমা। তার পর অনুপমের আলিঙ্গনের থেকে নিজেকে এক ঝটকায় নিজেকে সরিয়ে নিয়ে বলল, ‘‘ছিঃ, তা বলে এরকম মিথ্যে...’’

রাগে অনুপম জোরালো গলায় বলল, ‘‘এতে দোষের কী আছে?’’

‘‘নেই?’’ ফুঁসে উঠল রিমা।

‘‘যে-সত্যি মানুষকে কিছু দেয় না, উল্টে কষ্টের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়, তার চেয়ে এই মিথ্যে অনেক ভাল। একেবারেই নির্দোষ। এতে কারও কোনও ক্ষতি তো হচ্ছে না! যাকগে, আমার বসের সঙ্গে মিটিংয়ের দেরি হয়ে যাচ্ছে! আমি চললাম...’’ বলে দ্রুত পায়ে বেরিয়ে যায় অনুপম।

সত্যি-মিথ্যের এক অদ্ভুত দ্বন্দ্ব নিয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে থাকে রিমা।