Abosar

নিজস্বী

সুপ্রসা রায়

তুমি আবার চুরি করে খাচ্ছ!’’ বিষম চমকে উঠল প্রবীর। চমকের ধাক্কায় ঝাঁকুনি খেয়ে গেল হাড়জিরজিরে শরীরটা। হাত থেকে বাটিটা পড়েই যাচ্ছিল প্রায়। কোনও রকমে সেটা সামলে চোখ তুলে চাইল মেয়ের দিকে। দু’হাত কোমরে রেখে রাগত চোখে ওকে দেখছে আট বছরের হিয়া। দু’চোখের কাতর দৃষ্টি দিয়ে ওর কাছে দয়া ভিক্ষা চাইল প্রবীর। কিন্তু ওর আকুতিকে নস্যাৎ করে দিয়ে হিয়া আবার ধমকে উঠল, ‘‘দাঁড়াও, মামণি আসুক। বলে দেব।’’ কথাটা বলেই প্রবীরকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ছুটল শোওয়ার ঘরের দিকে। হতচকিত প্রবীর নিশ্চল হয়ে আশু ভবিষ্যতের ছবিটা কল্পনায় দেখতে লাগল। স্মিতা ফিরলেই ওর বিরুদ্ধে রং চড়িয়ে বলবে হিয়া। সঙ্গে সঙ্গে চালু হয়ে যাবে স্মিতার কথার জাঁতাকল। আর তাতে পেষাই হতে থাকবে প্রবীরের মর্যাদা, রুচিবোধ আর পরিবারের প্রতি আকর্ষণ।

যখন প্রবীরের রক্তে শর্করার আধিক্য দেখা দিল, স্মিতা সেটাকে আমল দেয়নি মোটেই। ডাক্তার রায়চৌধুরী প্রবীরের খাদ্যবিধি নির্দিষ্ট করে দিলেও, স্মিতা সেটা ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে বলেছিল, ‘‘ছাড়ো তো ডাক্তারদের কথা! পেশেন্টদের ভয় পাইয়ে দেওয়া ওদের স্বভাব।’’ মৃদু প্রতিবাদ জানিয়েছিল প্রবীর, ‘‘কিন্তু ডায়েট মেনে না চললে তো আরও ক্ষতি হবে আমার।’’ তবু পাত্তা দেয়নি স্মিতা। ‘‘স্ট্রেঞ্জ, এই ক’জন মানুষের জন্য দু’রকম রান্না হবে নাকি?” প্রবীর বুঝেছিল, আসলে ওর জন্য আলাদা করে রান্নার ঝক্কি নেবে না স্মিতা। আবার প্রবীরের যে ডায়েট তা ওর মুখে রুচবে না। তার পরেও প্রবীর বলার চেষ্টা করেছিল, ‘‘তুমি বরং আমার জন্য আলু বাদে সব সব্জি সেদ্ধ করে দিও।’’ শুনে আঁতকে ওঠার ভান করেছিল স্মিতা, ‘‘ইস, দিনের পর দিন ওসব খেলে তুমি আরও অসুস্থ হয়ে পড়বে তো! আমার কথা শোনো, ওষুধ খাও আর নর্মাল ডায়েট নাও। আমার দিদিও তাই করে। ও তো দিব্যি আছে।’’

অতএব, নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও স্মিতার পছন্দের খাবার খেয়ে যেতে হল প্রবীরকে। ফলও ফলল হাতেনাতে। ওর রক্তে চিনির মাত্রা বাড়ল হুহু করে। পাল্লা দিয়ে কমল শরীরের ওজন। সঙ্গে লেজুড় হয়ে জুড়ল দৃষ্টিহীনতা। বাঁ চোখ তো চিরকালের জন্য ইস্তফা দিল। ডান চোখটা ওকে ক্ষমাঘেন্না করে একটু-আধটু কাজ করে এখনও। এ সব কারণে অফিস থেকে বাধ্যতামূলক অবসর নিতে হয়েছে ওকে।

এই ঘটনার পরে ভয়ে না বিরক্তিতে বলা মুশকিল, প্রবীরের খাদ্য তালিকায় বদল আনল স্মিতা। তবে সব সময় যে সেগুলো প্রবীরের পক্ষে পুষ্টিকর অথবা যথেষ্ট হয়, তা নয়। তাই প্রবীরের সর্বদা দুর্বলতা আর খিদে খিদে ভাব লেগেই থাকে। স্মিতা নিজের আর মেয়ের জন্য নানা রকমারি পদ রান্না করে বা কিনে আনে। প্রবীরের বরাতে সেগুলো জোটে না। খিদে আর অপ্রাপ্তি মিলে, ওই খাদ্যগুলোর প্রতি প্রবীরের লোভ ক্রমবর্ধমান হয়ে উঠেছে। অগত্যা সুযোগ পেলেই দু’জনকে লুকিয়ে ও থাবা বসায় সেই খাবারে। প্রায়শই ধরা পড়ে। আর স্মিতার ধারালো বাক্যবাণে বিদ্ধ হয়ে অসহ্য জ্বালায় জ্বলতে থাকে ওর অনুভূতি।

হিয়ার কাছ থেকে ওর প্রতি কোনও টান আশা করে না প্রবীর। ও তো সত্যি সত্যি হিয়ার বাবা নয়। অবশ্য স্মিতাও ওর আসল মা নয়। তবু স্মিতার খুব ন্যাওটা। হিয়াকে যখন দত্তক নিল ওরা, সেই মুহূর্ত থেকে ওকে আঁকড়ে ধরেছে স্মিতা। তাতে অবশ্য প্রবীরের আপত্তি ছিল না। বেশ কিছু কাল ধরে সন্তান কামনায় অধীর হয়ে পড়েছিল স্মিতা। প্রবীর অনুভব করত ওর হাহাকারটা। শূন্যতা প্রবীরের মনেও ছিল। সারা দিন অফিসে কাজে কেটে যেত। বাড়িতে ফিরলেই যেন থমকে যেত সময়। ওদের দশ বছরের বিবাহিত জীবন, তার আগে তিন বছরের প্রেম চলাকালীন সব ঘটনার কথা বারবার বলাবলি করতে করতে একঘেয়ে হয়ে গিয়েছিল। দু’জনের মধ্যে প্রয়োজনীয় কথাই হত কেবল। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল একত্রে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখা। অফিসটা ছিল বলে প্রবীরের জীবনটা পুরোপুরি ফুরিয়ে যায়নি। কিন্তু এত বড় বাড়িতে সারা দিনের একাকিত্ব দিশেহারা করে তুলেছিল স্মিতাকে। ও ছিল আদ্যন্ত গৃহবধূ। একটা নিটোল সংসার চেয়েছিল ও। সেটা দিতে চেষ্টা করেছিল প্রবীর। সাংসারিক যে কোনও বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অগ্রাধিকার স্মিতাকেই দিয়েছিল। বাড়ি কেনা, সাজানো, বিভিন্ন ঘরের রং, বারান্দার গ্রিলের ডিজাইন— সব স্মিতার পছন্দ অনুযায়ীই হয়েছে। ধীরে ধীরে একতলা বাড়ি দোতলা হল, নীচের তলায় ভাড়াটে বসল, সবই স্মিতার তদারকিতে। কিন্তু এ সব কাজেও তো একটা সময় যতি আসে। সব কাজ, বিভিন্ন বিষয়ে পরিকল্পনা করার মন স্মিতাকে ছেড়ে গেল এক সময়। বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী, এমনকী ভাড়াটেদের কাছেও আড্ডা দিতে যেতে পারে না বেচারা। সকলের আলোচনার বিষয় যে তাদের সন্তান। সে সব আলোচনা যেন স্মিতার নিঃসন্তান হওয়ার দুঃখকে আরও প্রকট করে তোলে। ধীরে ধীরে  সে নিজেকে সমাজ থেকে সম্পূর্ণ গুটিয়ে নিল। সকলের প্রতি অর্থহীন একটা আক্রোশ জন্ম নিল ওর মধ্যে। আর ওর সব অপ্রাপ্তির ঝাঁঝ প্রবীরের উপরেই মেটাতে লাগল। প্রবীর প্রতিবাদ করত না। ইচ্ছে করলেই ও মনে করিয়ে দিতে পারত, বিয়ের তিন বছরের মাথাতেই সন্তানসম্ভবা হয়েছিল স্মিতা। দু’জনে তখন আনন্দে সুখের দোলায় দুলছে। নানা রঙের মিশেলে রামধনু ভাসছে জীবনের আকাশে। কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। স্মিতা বাথরুমে পা পিছলে পড়ে যাওয়ায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল সব আনন্দ।

সেই দুর্ঘটনার পরে, স্মিতাকে বেশ কয়েক জন অভিজ্ঞ স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে গিয়েছিল প্রবীর। নানা রকম পরীক্ষানিরীক্ষার পরে সকলেই রায় দিয়েছিলেন, দ্বিতীয় বার মা হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই ওর। স্মিতা বাস্তবটা মানতে চাইত না। ওর গর্ভপাত হওয়া, বা আবার মা হতে না পারার সব দায় অবুঝের মতো প্রবীরের উপরেই চাপাত ও। প্রবীর কিছুই বলত না। স্মিতার ক্ষতে নুনের ছিটে দিতে চাইত না ওর মন।

দত্তক নেওয়ার প্রস্তাবটা প্রবীরই দিয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে নাকচ করে দিয়েছিল স্মিতা। প্রবীরের কোনও কথাতে কখনওই সায় দিত না ও। বরং প্রবীরের মতের উল্টো কাজ করে এক ধরনের হিংস্র উল্লাস বোধ করত। গর্ভপাতের পরে তো আরও লাগামছাড়া। কথাটা শুনেই বিশ্রীভাবে খেঁকিয়ে উঠেছিল, “নিজের অক্ষমতা ঢাকতে অন্যের বাচ্চা মানুষ করবে! বলতে লজ্জা করল না?” তীব্র ক্ষোভে তেতে উঠত প্রবীরের ভিতরটা। দিনের পর দিন মিথ্যে দোষারোপ সইতে সইতে বিদ্রোহ করতে চাইত ওর শান্তিপ্রিয় মন। ইচ্ছে করত, অন্য কোনও নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে, তার গর্ভসঞ্চার করে স্মিতার বিকৃত মনের ভ্রমটা কাটিয়ে দেয়।

এক সময় বোধহয় ক্লান্ত হয়ে পড়ে নিজেই দত্তক নেওয়ার কথা বলল স্মিতা। প্রবীরের মনে হয়েছিল, যে হেতু ও এখন আর এই বিষয়ে উচ্চবাচ্য করে না, তাই স্মিতা ইচ্ছেটা প্রকাশ করল। নামটা স্মিতাই রেখেছিল। বলেছিল, ‘‘ও তো আমার হৃদয়, তাই ওর নাম দিলাম হিয়া।’’ প্রবীর খেয়াল করেছিল, ‘‘আমার কথাটায় জোর দিয়েছিল স্মিতা। ‘আমাদের’ বলেনি। মৃদু কণ্ঠে ওর ভুল শোধরাতে সচেষ্ট হয়েছিল প্রবীর, “ও আমাদের দু’জনেরই হৃদয়।’’ ওর কথা শেষ হওয়ার আগেই ঝলসে উঠেছিল স্মিতার দু’চোখ। জ্বলন্ত লাভা উগরেছিল ওর কণ্ঠ, ‘‘খবরদার, ওর উপর একদম অধিকার খাটানোর চেষ্টা করবে না। তোমার ক্ষমতা বোঝা হয়ে গিয়েছে আমার।’’ প্রবীর প্রতিবাদ করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ওর মুখ থেকে একটা কথাও বার হয়নি। আসলে প্রতিবাদ করার অভ্যাসই ওর ছিল না কোনও দিন। তবে সেই প্রথম ওর ভিতরে একটা জ্বালামুখী জানান দিয়েছিল নিজের অস্তিত্বের। তার পর স্মিতা যে ভাবে মেয়ের প্রতি একার অধিকার কায়েম করে ফেলল, তাতে চূড়ান্ত ঘৃণার জন্ম হল প্রবীরের মনে।

লুকিয়ে লুকিয়ে হিয়াকে বুকে চেপে ধরে আদর করত প্রবীর। চুমোয় চুমোয় উজাড় করে দিত ওর বাৎসল্য। স্মিতা দেখতে পেলেই নির্দয়ভাবে ছিনিয়ে নিত হিয়াকে। বিষাক্ত বাক্যবাণে ভরিয়ে তুলত প্রবীরের অন্তরাত্মা, ‘‘ও আমার, ওকে ছোঁবে না তুমি।’’

প্রবীর যে স্মিতার অধিকার ফলানো কথাগুলো আগে শোনেনি তা নয়। বাড়ি কেনার পর থেকেই শুনে আসছে। বারান্দার গ্রিলে পাখি বসলে, সেটাকে তাড়াতে প্রবীর গ্রিলে ঝাঁকুনি দিলেই, শব্দ শুনে রান্নাঘর থেকে ছুটে আসত স্মিতা। প্রায় ককিয়েই বলত, ‘‘ও মা গো, আমার গ্রিলে অমনভাবে ধাক্কা দিয়ো না। আমার বুকে ব্যথা লাগে।’’ একইভাবে মেঝেতে চা পড়ে গেলে, এমনকী পা পিছলে প্রবীর যদি দেওয়াল ধরে টাল সামলাত, তাতেও আঁতকে উঠত ও। প্রবীরের বলতে ইচ্ছে করত, গরম চা গায়ে পড়লে আমার যে খুব জ্বালা করত। মাটিতে পড়ে গেলে আমার হাত-পা ভাঙতে পারত। নিদেনপক্ষে ব্যথা তো লাগতই। তাতে তোমার কষ্ট হত না? এক সময় তো আমার গায়ে সামান্য আঁচড় পড়লেও তুমি কাতর হতে। এখন কি আমি আর কেউ নই! এই বাড়ি, দরজা জানলা, বারান্দা, গ্রিল, মেঝে সব আসলে আমার। আমিই মাথার ঘাম পায়ে ফেলে টাকা জোগাড় করেছি। বছরের পর বছর অফিসের পরে ওভারটাইম, সস্তার টিফিন খাওয়া, ছুটির দিনে টিউশন করেছি। প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে, আরও যেখান যেখান থেকে পেরেছি লোন নিয়েছি। তবেই তো তুমি সাধ মিটিয়ে তোমার বাড়ি সাজিয়েছ!

কথাগুলো প্রবীরের মনের ভিতরে গুমরে গুমরে বাইরে বেরোনোর পথ খুঁজত। আঘাতের পর আঘাত করত ওর পাঁজরে। কণ্ঠার কাছে এসে ধাক্কা দিত দুর্নিবার। প্রবীর জোর করে আটকে রাখত তাদের। ইচ্ছেমতো বলা আর করার অধিকারের চাবিকাঠিটা তো স্মিতার হাতে তুলে দিয়েছিল সে-ই। এখন অনধিকার চর্চা করে কী করে?

জ্ঞান হওয়া থেকেই হিয়া দেখেছে, মা সব-পেয়েছির দ্বার খুলে দিয়েছে ওর সামনে। বাবা ওর জন্য কিছুই করে না। কাজেই বাবা আর মেয়ের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে প্রথম থেকেই। আরও যেটা বেদনাদায়ক, একটু বড় হতেই মেয়ে বুঝে ফেলেছে, বাবা এই সংসারে প্রায় অবাঞ্ছিত। মা অনবরত শাসাচ্ছে বাবাকে। অতএব মা’কে খুশি করতে সেও তাতে ইন্ধন জোগাতে লাগল মহা উৎসাহে। এই প্রাপ্তিটা রীতিমতো উদ্‌যাপন করে স্মিতা। ইদানীং তো মেয়েটা ওকে বাবা বলে ডাকেও না। ধীরে ধীরে প্রবীরের ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ে মা আর মেয়ে দু’জনের বিরুদ্ধেই জমে উঠেছে ঘৃণার পাহাড়।

সান্ধ্য ঝিমুনিটা মৃদু ঝটকায় কেটে গেল। সচকিত হয়ে উঠল প্রবীর। কোণের ঘরে হিয়াকে পড়াতে বসিয়েছে স্মিতা। সুবর্ণ সুযোগ। মার্জারের মতো পদক্ষেপে খাওয়ার ঘরে চলে গেল প্রবীর। লাগোয়া বাথরুম থেকে ইঁদুর মারার বিষ এনে, টেবিলে সাজিয়ে রাখা স্মিতা আর হিয়ার খাবারে মিশিয়ে দিল। হাঁপাচ্ছে উত্তেজনায়। বড়জোর আর ঘণ্টাখানেক। তার পরেই মুক্তির সুখ উদ্‌যাপন করবে প্রবীর। কল্পনায় ও যেন মৃত শরীরদুটো দেখতে পাচ্ছে। আহ, সময় যেন আর এগোতেই চাইছে না! আচমকা কানে এল হিয়ার আর্ত চিৎকার, ‘‘বাবা গো!’’ ঘুম ভেঙে ধড়ফড়িয়ে উঠে বসল প্রবীর। শরীর ঘর্মাক্ত। প্রবল বেগে ওঠানামা করছে বুকের খাঁচা। পাশের ঘরে ঘুমের মধ্যে কাতরে উঠেছিল হিয়া। স্মিতা অভয় দিচ্ছে ওকে। প্রবীর তা হলে স্বপ্ন দেখছিল! এ কেমন স্বপ্ন! হত্যা তো দূরের কথা, কখনও ওদের মৃত্যুও চায়নি। তবে কী ওর অবচেতনে ঘাপটি মেরে বসেছিল বাসনাটা! ছি ছি! ঘাড় নাড়তে নাড়তে নিজেকেই ধিক্কার দিতে থাকে প্রবীর।

হঠাৎ মাথার ভিতরে বিদ্যুৎ চমক! হিয়া ঘুমের ঘোরে ‘বাবা’ বলে ডেকে উঠল না? তা হলে কী ওর ছোট্ট মনের গভীরে কোথাও বাস করে প্রবীর? পুলকিত প্রবীর নিজের হৃদয়ের স্পন্দন শুনছে কান পেতে। ওর মনের জমিতে এত কালের পাতা ঝরে যাওয়া গাছটা ভরে উঠেছে কচি পাতায়। কুলকুল করে একটা ঝর্না বইতে লেগেছে ওর বুকের ভিতরে।

জানালার দিকে দৃষ্টি গেল প্রবীরের। ওর জীবনের মতো, সেখানেও উষালগ্নে নতুন করে জেগে উঠছে প্রকৃতি।

ছবি: রৌদ্র মিত্র