ঘরের শেষপ্রান্তে ডান দিক ঘেঁষে শেষ চেয়ারটিতে যিনি বসে আছেন তাঁকে ঠিক বৃদ্ধ বলা চলে না। অথচ মুখের বলিরেখায় তাঁর প্রৌঢ়ত্ব পেরোনোর ইঙ্গিত স্পষ্ট। আসলে ওঁর শিরদাঁড়া সোজা করে বসার ভঙ্গিতে এবং দাড়ি-গোঁফের সুচারু বিন্যাসে বার্ধক্যের ছাপ অনায়াসে মেরে দেওয়া যাচ্ছিল না। দৃষ্টি বারবার ওঁর প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছিল কারণ, মন বলছিল উনি আমার খুব পরিচিত। কিন্তু আমার সেই অভদ্র রোগটার জন্য কিছুতেই ঠিক সময়ে নাম বা পরিচয়ের স্থান একসঙ্গে মনে পড়ে না। প্রায়-বৃদ্ধ মানুষটির পাশের চেয়ারটি খালি। আমি মনে-না-পড়া একটি আবছা দ্বিধা নিয়ে সেই চেয়ারটিতে উপবিষ্ট হলাম।
‘‘যদি কিছু মনে না করেন...’’ এমনতর আলাপচারিতায় অপর পক্ষ সাধারণত তাকান আশ্চর্য হয়ে। উনি স্মিত স্বচ্ছ হাসি দিলেন। জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘চোখ দেখাতে?’’
‘‘চোখ? না তো। আমি তো কান... বেশ ঘাবড়ে গিয়ে আমি উত্তর দিলাম। এটা তো ইএনটি চেম্বার... নয়?’’
‘‘আপনি একটা মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটালে এসেছেন,’’ ভদ্রলোক খানিক জ্ঞান দেওয়ার ভঙ্গিতে বললেন।
‘‘তা বলে এক চেম্বারে চোখ-কান দুটোই!’’
উনি হঠাৎ জোরে হেসে উঠে বললেন, ‘‘দুটোই কিন্তু সর্বক্ষণ খোলা রাখা চাই।’’ আমি চারপাশে আড়চোখে তাকালাম। ওঁর হাসিতে সকলের আমাদের দিকে তাকানোর কথা। ডাক্তারের চেম্বারে এ ভাবে কেউ হেসে ওঠে না। কিন্তু কি আশ্চর্য! কেউ ভ্রুক্ষেপ করল না আমাদের।
কেউ কি শুনতেই পেল না অমন বিকট অট্টহাসিখানা? আমার বেশ গোলমেলে লাগল় ব্যাপারটা। মনটা অন্য দিকে ফেরাতে এ বার ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করলাম, ‘‘আমাদের কি আগে কোথাও পরিচয় হয়েছে? কেমন যেন চেনা চেনা...’’
‘‘আলবাত!’’ প্রত্যয়ের সঙ্গে উত্তর দিলেন তিনি, ‘‘নয়তো এত জায়গা থাকতে এই ডাক্তারের চেম্বারে আমাদের হঠাৎ দেখা হবে কেন?’’ এ বার আর আমার কোনও সংশয় রইল না। এঁর চোখ নয়, মাথাটাই দেখানো আগে দরকার।
‘‘তা হলে তো এত জন রুগি বসে আছেন, সকলেই সকলের পূর্বপরিচিত বলতে হয়!’’ আমি এ বার হালকা স্বরে মজা করতেই কথাটা বললাম।
উনি কিছু বলার আগেই এক জন অতি শুভ্র স্কার্ট পরিহিতা সুন্দরী নার্স এসে ভদ্রলোকের দু’চোখে ড্রপ দিয়ে গেল। শুধু ওঁকেই নয়, বেশ কিছু অন্য রোগীকেও দিল। নার্স কি তবে সকলকে চেনেন? কার কান, কার চোখ, কার হার্ট, সব যুবতীটির নখদর্পণে! আমার একটু আফসোস হল। যদি চোখ দেখানোর থাকত তবে যুবতী আমারও চোখের পাতা টেনে ধরে যত্নে দু’ফোঁটা ওষুধ ঢালতেন, তাঁর তীব্র সুরভিত অস্তিত্ব ঘোষণা করে।
‘‘লাভ নেই মশাই,’’ পাশের ভদ্রলোক ঘাড়-এলানো চোখ-বোজা অবস্থায় ঠোঁটের কোণে মুচকি হাসি এনে বললেন, ‘‘এ হল আবিলতার ওষুধ, দৃষ্টি শুধু ঝাপসা করে।’’
আমি এখন ওঁর কোনও কথাতেই আর আশ্চর্য হচ্ছি না। চমকে দিয়ে কথা বলা ওঁর অভ্যাস, আমি বেশ বুঝে ফেলেছি। দুটো চেয়ার পরেই পরিচিত মুখ দেখে এগিয়ে গেলাম।
‘‘আরে, বিপ্লব না! বিপ্লবই তো...’’
‘‘আপনি?’’
‘‘চিনতে পারলি না? শালা যা মাঞ্জা দিয়েছিস!’’
‘‘আমি কিন্তু এখনও আপনাকে, আই মিন তোমাকে, মানে আপনাকে চিনতে পারছি না।’’
‘‘অ্যাট লিস্ট বিপ্লব নামটা ঠিক আছে তো?’’ আমি ইচ্ছে করে রহস্য বাড়াতে নিজেকে প্রকাশ করলাম না।
‘‘আমার নাম বিপ্লবই। তবে আপনাকে ঠিক চিনতে পারছি না।’’
‘‘ঘুঘুপোতা নীলমাধব শীল উচ্চবিদ্যালয়! ছিয়াশির মাধ্যমিক। দিবাকর স্যরের থাপ্পড় খাওয়া একসঙ্গে। থুতনির পাশে দাগটা তো এখনও সেই রক্তপাতের সাক্ষ্য বইছে। এত তাড়াতাড়ি সব ভুলে গেলি?’’
অজ্ঞাতসারেই বিপ্লবের তর্জনী থুতনির পাশের স্থানটায় স্পর্শ করল। তার পর খুব গম্ভীর স্বরে অথচ সংযত ভঙ্গিতে বলল, ‘‘ঘুঘুপোতা বলে যে কোনও গ্রাম আছে এ পৃথিবীতে, এই প্রথম জানলাম। আমি বরাবরই সোনাডাঙার বাসিন্দা। আর থুতনির দাগটা কুলগাছ থেকে পড়ে গিয়ে, তখন আমার আট বছর বয়স। সেই সঙ্গে ঊরুতে দু’ইঞ্চি ডিপ কাট। দেখবেন?’’
আমি কেমন কেন্নোর মতো গুটিয়ে গিয়ে প্রবলভাবে “না... না” বললাম। তবে সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে লোকটাকে জরিপ করে স্থির নিশ্চিত হলাম যে, ব্যাটা নিজের পরিচয় নির্ঘাত লুকোচ্ছে। নয়তো ঊরুর দাগ যদি সত্যি সত্যি দেখতে চাইতাম, পারত দেখাতে এতগুলো পুরুষ আর মহিলার সামনে? বিপ্লবটা এমন বুজরুক হয়ে গিয়েছে! কিন্তু বাল্যবন্ধুর কাছে নিজেকে লুকোনোরই বা কারণ কী! স্মাগলিং করে না কি, কিংবা বেআইনি ব্যবসা? নাকি আস্ত একটা মার্ডারই করে ডাক্তারের চেম্বারে ঢুকেছে গা ঢাকা দিয়েছে! যা দিনকাল, কাউকে কিছু বিশ্বাস নেই। আমি মেঘলা মন নিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে রিসেপশনের দিকে গেলাম। এত দেরি করছে এরা ডাকতে! বিরক্তিকর। ডেস্কের কাছে গিয়ে চমকানোর পালা। মিতালি পাল। এবার কোনও ভুল নেই।
‘‘মিতালি পাল তো?’’ আমি আন্তরিক স্বরে বললাম।
‘‘বলুন।’’ বরফদৃষ্টিতে তাকিয়ে মেয়েটা উত্তর দিল। আর তখনই লক্ষ করলাম, ওর সযত্নে পরা শাড়ির উপর বুকের ঠিক বাঁ দিকে ওর নামটা জ্বলজ্বল করছে। আমি অল্প বিমর্ষ হলাম। সামলে নিয়ে তৎক্ষণাৎ বলে উঠলাম, ‘‘বরাহনগরের দিকে থাকা হয় তো?’’
‘‘আপনিও কি ও দিকের?’’ মিতালি সাবলীল হয়ে বলল। ‘‘চিনলে না আমাকে? নাইনটি টু-এর স্কটিশ কলেজ।’’
‘‘কিন্তু আমি তো বেথুন। বাসে বা মিনিতে হয়তো দেখা হয়েছে কখনও। গুলিয়ে গেছে আপনার।’’
সত্যি গুলিয়ে যাচ্ছে। এ বার যদি বা নাম-ঠিকানা দুটোই মিলল, বলে কিনা বেথুন কলেজ! অথচ আমি স্পষ্ট মনে করতে পারছি, মাঝে মাঝেই ক্লাস ডুব দিয়ে মেয়েটা ফিরে এসে কাঁচুমাচু মুখ করে বিস্তর ন্যাকামি মাখিয়ে বলত, ‘‘ইংলিশ-এর নোটগুলো দিবি রে প্লিজ়, জাস্ট এক দিনের জন্য!’’
‘‘আপনার বিষয় ছিল ইংলিশ। ঠিক বলছি তো?’’ আমি মনে মনে মরিয়া, তবু হাসিমুখেই বললাম।
‘‘এটাও কিন্তু লাগল না। বেথুনে বাংলা। তার পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়,’’ মিতালি পাল অবলীলায় আমার সমস্ত উৎসাহে জল ঢেলে দিয়ে বলল। ভয়ার্ত চোখে তাকালাম মেয়েটার দিকে। এরা অনায়াসে দিনকে রাত করতে পারে। হতাশ হয়ে কথা ঘোরাতে আমি বললাম, ‘‘এত দেরি হচ্ছে কেন
বলুন তো?’’
‘‘একটু তো হবেই, এত রোগী!’’
‘‘কিন্তু সবাই তো কান নয়।’’
‘‘নয়ই তো। সব রকমই আছে। সময় তো লাগবেই। ডাক্তারবাবু সেই সকাল থেকে দেখছেন।’’
‘‘এক জনই ডাক্তার? সর্বনাশ,’’ আমি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে বলি।
‘‘উনি তো একাই,’’ নির্বিকার গলায় বলে মিতালি পাল।
আমার মাথা ঝিমঝিম করে। কোনওরকমে বলি, ‘‘অনেকক্ষণ হয়ে গেল। সেই কখন এসেছি,’’ নিজের স্বর নিজের কানেই অসহায় শোনায়।
‘‘কখন এসেছেন, মনে করতে পারেন?’’
তাই তো! কখন কী ভাবে এলাম এখানে, অনেক চেষ্টা করেও কিছুতেই মনে এল না। আমি ঘন ঘন মাথা নাড়ি দু’পাশে। ভূতগ্রস্তের মতো আবছা বলি, ‘‘মনে পড়ছে না।’’
আমি পাশের একটা চেয়ারে ঝুপ করে বসে পড়লাম। মাথার ভিতরটা ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। যেন একটা বাজারের মধ্যে চোখ বুজে দাঁড়িয়ে আছি। চারপাশে কত কোলাহল, কত শব্দ। চেয়ারের হাতলটা আমি শক্ত করে ধরে প্রাণপণে আবার ভাবতে চেষ্টা করলাম, আমি ঠিক কী ভাবে এই চেম্বারে এসে পৌঁছলাম। আমি কি পথ চিনে নিজেই এসেছি? নাকি চোখে কালো কাপড় বেঁধে কেউ আমাকে এখানে আনল! আমার হঠাৎ মনে পড়ল এক অসীম অন্ধকার, অনন্ত জলজ অবস্থানে আমি সতত সন্তরণরত ছিলাম কালের গণ্ডি পেরিয়ে, কল্পান্ত ছাড়িয়ে এক অমোঘ তন্ময়তায়। এই আমি কি সেই আমি? নাকি এতটা পথ আসতে গিয়ে বদলে গিয়েছে আমার পরিচয়, আমার নাম! তাই কি আমার চেনা মানুষগুলো আমাকে আর চিনতে পারছে না! আরও সব যেন গুলিয়ে গেল। আর তখনই কে আমার নাম ধরে ডাকল। আমি দাঁড়ালাম ডাক্তারের চেম্বারের বন্ধ দরজাটার সামনে।
বাইরে টুলে বসা লোকটা এত ক্ষণ খুব কঠিন দৃষ্টিতে চারপাশ দেখছিল, এখন সে-ই মাথা তুলে আমাকে দেখে সামান্য হাসল। অনুমতি চাওয়ার ভঙ্গিতে তাকালাম। সে সম্মতিসূচক মাথা নাড়ল। ঘরে ঢুকলাম। ঘরটা লম্বাটে। জানালায় ভারী পর্দা। সবগুলো টানা। ঘর-ভর্তি রকমারি যন্ত্রপাতি। ঘরের শেষ প্রান্তে একটা মাঝারি টেবিল। সামনে দুটো চেয়ার, পিছনে একটা। দেখা যাচ্ছে না, শুধু অনুমান করা যায়। কারণ একটা তীব্র আলো জ্বালানো আছে রোগীর দিকে মুখ করে। সারা ঘরে একটাই আলো। আমি গুটিগুটি পায়ে চেয়ারের কাছে গেলাম। কিছু দেখার চেষ্টা করলাম না, শুধু মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলাম। ও পাশ থেকে কোনও শব্দ নেই। তবে বেশ বুঝলাম, তীক্ষ্ণ একজোড়া চোখ আমাকে জরিপ করছে। অস্বস্তি হলেও বলে ফেললাম, ‘‘আমার কিন্তু কান।’’
‘‘হবে, সব হবে,’’ জলদগম্ভীর স্বর তাঁর। অথচ কত মায়াময়।
‘‘বসতে পারেন,’’ আদেশের ভঙ্গিতে অনুরোধ করলেন।
আমি বসলাম। ল্যাম্পের তীব্র আলো চোখ ধাঁধিয়ে দিল। চারপাশে আঁধার ঘনিয়ে এল। আমি রিফ্লেক্সে চোখ বুজলাম। বড্ড আলো। আমি বললাম, ‘‘থাক ওটা।’’
‘‘একটু বেরিয়ে না থাকলে খেলা জমে না,’’ নরম স্বরে বললেন তিনি।
‘‘খেলা!’’ আমি থমকালাম, যদিও কোনও উত্তর দিলাম না। অনুনয়ের সুরে বললাম, ‘‘এ বার যদি কানটা এক বার দেখেন।’’
এ বার খুব অদ্ভুত একটা প্রশ্ন করলেন উনি। ‘‘মারোয়া আর ভীমপলশ্রীর তফাত করতে পারেন? শুদ্ধ আর কোমল গান্ধারের? ওটা ঠিক না হলে কানের প্রবলেমটা কিন্তু যাবে না।’’
জবাব দেব কী, এই সব বিজাতীয় শব্দের ভিড়ে আমি দিশাহারা। আমার সঙ্গে মস্করা করছেন নাকি! অথচ কণ্ঠস্বরে তো তেমন কিছু বোঝা গেল না। আমি একটা ক্ষুণ্ণ মন নিয়ে চারপাশের বিকট সব যন্ত্র দেখতে লাগলাম। আমার দৃষ্টিকে অনুসরণ করেই হয়তো উনি বললেন, ‘‘ইন্দ্রিয় সারাইয়ের কারখানা বলতে পারেন। আসলে আপনার প্রবলেম কানে শোনা নয়। মোনাডিক সাট্লটি বোঝেন? তারই অভাব। শব্দ না, শব্দ তন্মাত্র।’’ ব্যাপারটা পুরোটাই মাথার উপর দিয়ে গেল। উনি বলে চললেন, ‘‘সে ভাবে দেখতে গেলে অন্য ইন্দ্রিয়গুলিতেও ডিফেক্ট পাওয়া যাবে হয়তো। সুখের জন্য, বা বলা যায় দুঃখ নিবারণের জন্য এসেছেন এই হাসপাতালে, পুরো সুস্থ হয়েই যান।’’ আমি কিছু না বুঝে বোকার মতো মাথা নাড়লাম। উনি বললেন, ‘‘আপনি ইনডোরে ভর্তি হয়ে যান, ফুল চেকআপ জরুরি।’’
‘‘কিন্তু বাড়িতে খবর,’’ চিন্তিত গলায় বললাম।’’
‘‘ও নিয়ে চিন্তা করবেন না। বাড়িতে ঠিক খবর পৌঁছে যাবে। আমাদের সে ব্যবস্থা আছে।’’
আমি চেয়ার ছেড়ে উঠতে উদ্যত হতেই উনি বললেন, ‘‘হয়তো এই মুহূর্তে চেম্বারের বাইরে আপনারই পরিচিত কোনও স্বজন, আত্মীয়, বন্ধু বা প্রতিবেশী ডাকের অপেক্ষায় বসে আছেন।’’
‘‘আছে তো,’’ আমি উৎসাহে বলি। ‘‘কিন্তু পরিচিতেরা কেউ আমাকে চিনতে পারছে না।’’
‘‘ভাববেন না। এখানে কিছু গোপন থাকে না। এক দিন সব কিছু প্রাঞ্জল হয়ে যাবে, সম্পর্কগুলোও। আফটার অল, এটা তো আরোগ্য নিকেতন। এটাই খেলা, যার কথা বলছিলাম একটু আগে।’’
হঠাৎই আমি উৎফুল্ল হয়ে উঠে দাঁড়িয়ে করমর্দনের জন্য হাত বাড়ালাম।
‘‘হাত মেলানোর সময় এখনও আসেনি,’’ তিনি দৃঢ় অথচ প্রেম-মাখা স্বরে আমাকে নিরস্ত করলেন।
আমি পিছন ফিরে দৃপ্ত ভঙ্গিতে হাঁটতে শুরু করলাম। স্পষ্ট বুঝলাম, ডাক্তারবাবু দেখছেন। চলতে চলতে ঘরটা যেন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে লাগলো। পথ আর ফুরোয় না। ঘরটা ক্রমশ অলিন্দ হয়ে গিয়ে যেন কোন অজানা বিন্দুতে মিশেছে। অন্ধকারের মধ্যে অনুভব করলাম, দু’পাশে অসংখ্য থামগুলো সব জীবন্ত হয়ে উঠেছে। আমি হাঁটতে হাঁটতে বুঝতে পারলাম, আমার অবয়বটা ছোট হতে শুরু করেছে। এ ভাবে যেতে যেতে এক দিন আমি হেঁটমুণ্ড-ঊর্ধ্বপদ হয়ে আবার মাতৃগর্ভে প্রবেশ করব।