Abosar

গাধা

সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়

টিয়াপাখির মতো ঠোঁট সরু করে আমার গালে ঠোক্কর দিল শুক্তি। আমি আহত গলায় বললাম, “এটা কী হল?”

শুক্তি চোখ পাকিয়ে বলল, “এ-ই অনেক, যা ফোট…”

শুক্তির সঙ্গে আগে থেকে চুক্তি করা ছিল পিন্টুদার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিলে আমার একটা হামি পাওনা হবে। পিন্টুদা আমার পিসতুতো দাদা, সাংঘাতিক ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট, বম্বে আইআইটি থেকে গ্র্যাজুয়েশন করে কর্নেলে কম্পিউটার সায়েন্সে পিএইচ ডি করছে। শুক্তি শুনেই লাফিয়ে উঠেছিল, “তুই জাস্ট আলাপ করিয়ে দে… তার পর আমি বুঝে নেব।”

শুক্তির ধারণা যেন তেন প্রকারেণ আমেরিকায় সেটল্‌ড হতে না পারলে জীবনটা ধাপার মাঠের ফুলকপির মতো হয়ে যায়। আমেরিকায় তাকে যেতেই হবে, সে নিজের দমে হোক বা বরের। আমি বলেছিলাম, “তুই আবার কী দেখবি? পিন্টুদার সঙ্গে বেশি ইন্টু-পিন্টু করতে যাসনি, ভীষণ নাক উঁচু, আইভি লিগ ইউনিভার্সিটি ছাড়া পিএইচ ডিও করবে না ঠিক করেছিল…”

শুক্তি আমায় থামিয়ে দিয়ে বলেছিল, “তুই টেনশন নিস না, আমি ঠিক ম্যানেজ করে নেব। তোর পিন্টুদাকে চিন্টুদা বানিয়ে না দিতে পারলে আমার নামে কুকুর পুষিস। দু’-মাসের মধ্যেই দেখবি সে দাঁতে গোলাপ-ডাঁটি কামড়ে আমার হাঁটুর কাছে হামাগুড়ি দিচ্ছে।” 

আমি দিব্যচক্ষে পিন্টুদার সেই চূড়ান্ত অবমাননার দৃশ্য কল্পনা করে শিউরে উঠেছিলাম। পিন্টুদার সঙ্গে আমার বুদ্ধিবৃত্তির তুলনামূলক হেনস্থা ছোটবেলা থেকে দাঁতে দাঁত চেপে  সহ্য করে আসছি। শুক্তি যদি সেই অপমানের খানিকটা শোধ তুলতে পারে, আমার থেকে বেশি খুশি কেউ হবে না। শুক্তির যা ক্যালি, হামাগুড়ি কেন, চাইলে পিন্টুদাকে দিয়ে ওদের বাড়ির খড়খড়ে সিমেন্টের উঠোনে নাকখতও টানাতে পারে। তবে শুক্তি শেষ পর্যন্ত আমেরিকায় গিয়ে বাসন-মাজা, ঘর-মোছার কাজ ধরবে ভাবতে খারাপ লাগছিল। যাক গে, আমার কী! নেহাত ছোটবেলার বন্ধু, সতর্ক করে দেওয়া কর্তব্য, বলেছিলাম, “এখন আমেরিকা যাওয়াটা কিন্তু রিস্কি, পিন্টুদাও বলছিল, ডিগ্রি পাওয়ার পর যদি ওয়ার্কিং ভিসা না পায়, সোজা ব্যাক টু প্যাভিলিয়ন।”

শুক্তি পাত্তাই দিল না, বলল, “যদির কথা নদীতে… তুই কেবল সেটিং করে দে।”

আমি মওকা বুঝে একটু দরদস্তুর করেছিলাম, “হামি দিবি তো? তিনটের কমে কিন্তু হবে না, আগেই বলে দিচ্ছি।”

শুক্তি মুখ ভেঙিয়ে বলেছিল, “অত খায় না, একটা পাবি, বড়জোর…”

আগে দু’-এক বার শুক্তি ভোগা দিয়েছে, কথা দিয়েও কোনও না কোনও বাহানা করে এড়িয়ে গেছে। আমি নিঃসন্দেহ হবার জন্য জিজ্ঞেস করেছিলাম, “ফ্লায়িং নয় তো?”

এই হামি দেওয়া নিয়ে একটা কথা আছে। আমার ও শুক্তির ঠাকুরদারা অভিন্নহৃদয় বন্ধু ছিলেন। মফস্‌সলের এ-পাড়া, ও-পাড়া, ছোটবেলায় দু’বাড়িতে অবাধ যাতায়াত ছিল। তখন বড়রা দু’টি প্রায় সমবয়স্ক শিশুর একে অন্যকে হামি দেওয়ার আগ্রহ নিয়ে নাকি খুব হাসাহাসি করতেন। ঠাকুরদারা দেহ রাখার পর বাবারা কাজেকর্মে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় যাতায়াত কমে এসেছিল। শুক্তির সঙ্গে আমার নতুন করে বন্ধুত্ব হয়েছিল, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে যাওয়ার পর। শুক্তি আমার কলেজেই এক বছরের জুনিয়র। পুরনো নোটস নিতে আমাদের বাড়িতে এসে ঠাকুমার খপ্পরে পড়েছিল। ঠাকুমা তার চিবুক ধরে ছানি পড়া চোখে জরিপ করে বলেছিল, “মাইয়াটারে যেন চেনা চেনা লাগতাছে…”

শুক্তি বলেছিল, “ও ঠাম্মা, চিনতে পারলে না, আমি শুক্তি… রায় ডাক্তারের নাতনি… ”

ঠাকুমা শুক্তিকে বুকে জড়িয়ে বলেছিল, “ওম্মা! কত বড় হয়ে গেছিস… ছেলেবেলায় তোদের দুই জনকে দুই কোলে বসিয়ে জিলিপির ডাঁটি ভেঙে মুখে দিতাম, তোরা দু’জনে চুষে-চুষে খেতিস, তার পর নালঝোল মাখা ঠোঁটে একে
অন্যকে হামি দিতিস… তা হ্যাঁ রে, মেয়ে, আমার নাতিটাকে এখনও হামি দিস না কি?”

ঠাকুমার রসবোধ জিলিপির চেয়েও বেশি চটচটে। শুক্তি অবশ্য গায়ে মাখেনি, বলেছিল, “তোমার নাতিকে হামি দিতে আমার বয়েই গেছে… গাল ভর্তি ব্রণ, হ্যাক থুঃ!”

সে দিন চলে যাবার সময় শুক্তিকে আলতো করে বলেছিলাম, “নোটস তো নিলি, হামি দিলি না?”

শুক্তি বলেছিল, “শখ মন্দ নয়, লেগে থাক, ভেবে দেখব…”

ওই পর্যন্তই। আমাদের বন্ধুবান্ধবরাও মোটামুটি মেনে নিয়েছে আমাদের প্রেম-ফ্রেম হবে না। শুক্তি গ্রিন কার্ড হোল্ডার ছাড়া প্রেম করবে না আর আমার আমেরিকা তো দূর অস্ত্‌, কলকাতায় গেলেই মনে হয় রাস্তা হারিয়ে ফেলব, বাড়ি ফিরতে পারব না, ট্রেনে ট্রেনে গান গেয়ে ভিক্ষে করে খেতে হবে। যাই হোক, পিন্টুদার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে একখানা নন-ফ্লায়িং হামির কড়ার করে এসেই পিন্টুদার নামে একটা ফেক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলেছিলাম। সোশ্যাল মিডিয়ায় পিন্টুদার কোনও পদচিহ্ন ছিল না। সে কর্মী পুরুষ, কৃত্রিম বুদ্ধি নিয়ে রিসার্চে ব্যস্ত, ফেসবুকে ‘টাইম্পাস’ করার মতো সময় বা রুচি কোনওটাই তার নেই। আমার কাছে পিন্টুদার যা পুরনো ছবি-ছাবা ছিল তাই দিয়েই কাজ চালিয়ে নিয়েছিলাম। নেট ঘেঁটে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে দু-একখানা ভারী ভারী খবর পোস্টিয়ে শুক্তিকে ফোন করেছিলাম, “পিন্টুদার সঙ্গে মেসেজে কথা হয়েছে, তোর কথা বলেছি।”

শুক্তি একটু অবাক হয়েছিল, “এত তাড়াতাড়ি…!”

বলেছিলাম, “শুভস্য শীঘ্রম্! তুই ওর প্রোফাইল খুঁজে, একটা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে রাখ… ওর প্রোফাইলের ছবিটা আমার তোলা, পিন্টুদা দিঘার সমুদ্র-সৈকতে একটা নৌকোর গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, জিন্‌স আর হলুদ টি-শার্ট, দূরে ঝাউবন, পিকচার কার্টেসিতে আমার নামও আছে, দেখে নিবি, অ্যাকসেপ্ট করতে পিন্টুদার একটু সময় লাগতে পারে… বলছিল টেক্সাস যাবে, একটা কনফারেন্স অ্যাটেন্ড করতে।”

শুক্তি  ‘ঠিকাছে, ঠিকাছে’ বলে লাইন কেটে দিয়েছিল। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিল পাক্কা এক সপ্তাহ বাদে, আমি রোজ রিকোয়েস্ট লিস্ট চেক করে করে হেদিয়ে যাওয়ার পর। অ্যাকসেপ্ট করে লিখেছিলাম, ‘হাই’। শুক্তি উত্তর দেয়নি। এমন নাতিশীতোষ্ণ ব্যবহারের কারণ জানতে শুক্তিদের বাড়ি এসেছিলাম। দেখলাম শুক্তির জ্বর হয়েছে, চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। মাসিমা বললেন, “বোসো, চা দিচ্ছি…”

চেয়ার টেনে শুক্তির খাটের পাশে বসে বলেছিলাম, “কী রে, হঠাৎ জ্বর বাধালি কী করে?”

শুক্তি বলেছিল, “দু’রাত এসি মিনিমাম টেম্পারেচারে রেখে শুয়েছিলাম…”

আমি আঁতকে উঠে বলেছিলাম, “সে কী, কেন?”

শুক্তি সর্দি-বসা ভারী গলায় বলেছিল, “দেখছিলাম ঠান্ডা সহ্য করতে পারি কি না! আমেরিকায় গেলে তো…”

আমি ওকে থামিয়ে বলেছিলাম, “তোর কি মাথা খারাপ হয়েছে?”

সে কথার জবাব না দিয়ে শুক্তি বিছানার ওপর উঠে বসে বলেছিল, “থ্যাঙ্কস রে, পিন্টুদার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেবার জন্যে… ছেলেটার ছবি দেখে মনে হল গাধা টাইপের… বেশি ঝঞ্ঝাট করবে না।”

আমি পিন্টুদাকে গাধা বলার তীব্র প্রতিবাদ করতে যাচ্ছিলাম, ঠিক সেই সময়, যা বলছিলাম…  শুক্তি ওই টিয়া পাখির কায়দায় আমার গালে ঠোক্কর দিল। আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেলেও সামলে নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলাম, শুক্তি যথারীতি পাত্তা দিল না। আমি বললাম, “এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না, তুই বার বার কথা দিয়ে কথার খেলাপ করছিস।”

শুক্তি খানিকটা নরম হয়ে বলল, “আচ্ছা, সব কিছু ঠিকঠাক নেমে গেলে তোকে সত্যি-সত্যি হামি দেব, এখন ঝামেলা করিসনি, স্ট্র্যাটেজি ঠিক করতে দে। শোন, তোকে একটা কোশ্চেনেয়ার পাঠাব— পিন্টুদার ফেভারিট কালার, কী খেতে ভালবাসে, কোন ধরনের গান শুনতে পছন্দ করে, এটসেট্রা এটসেট্রা… তুই ফিল আপ করে পাঠিয়ে দিস।”

মাসিমা চা দিয়ে গিয়েছিলেন, আমি চুমুক দিয়ে বললাম, “আচ্ছা।”

শুক্তি বলল, “কায়দা করে জানতে পারবি, কোনও গার্ল ফ্রেন্ড-ট্রেন্ড জুটিয়েছে কি না?”

আমি জিজ্ঞেস করলাম, “জোটালে কী করবি?”

শুক্তি বলল, “সব রোগেরই ওষুধ আছে, তুই খালি খবরটা বার কর।”  

আমি বললাম, “আচ্ছা।”

শুক্তি ঝাঁঝিয়ে উঠল, “কী তখন থেকে আচ্ছা, আচ্ছা করছিস! বাড়ি যা, আমি ঘুমোব…”

শুক্তি চাদর মুড়ি দিয়ে শুল, আমি ভিজে বেড়ালের মতো চুকচুক করে চা খেয়ে উঠে পড়লাম। রাত্তিরে কম্পিউটার খুলে পিন্টুদার প্রোফাইলে লগ ইন করে দেখলাম শুক্তি পিন্টুদার হাই-এর জবাব দিয়েছে, মামুলি কয়েকটা শব্দ, ঘিষিপিটি দু’-একটা ইমোজি। মেয়েটার মন বোঝা ভার। আমি পিন্টুদার হয়ে এক ফিলিপিনো সুন্দরীর ছবি পোস্টালাম, মিয়ামি বিচে ছাতার নিচে বসে চোখের থেকে গ্লেয়ার্স নামিয়ে লেবুর ফালি আটকানো শরবতের গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে, পিন্টুদা পাঁচ-চার, বেঁটে বক্কেশ্বর, তার সঙ্গে লম্বা চওড়া গার্ল ফ্রেন্ড মানাবে না। শুক্তির মেসেজের ধরি-মাছ-না-ছুঁই-পানি করে একটা উত্তর দিলাম। জিজ্ঞেস করলাম, শুক্তির কম্প সায়েন্সে ইন্টারেস্ট আছে কি না, হবি কী, এই রকম আরও দু’-একটা হাবিজাবি। শুক্তি অনলাইন দেখলাম, কিন্তু রা কাড়ল না। চুলোয় যাক, লগ আউট করে, ল্যাপটপের ডালা নামিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।

পরের দিন সকালে উঠে দেখলাম শুক্তি ইমেলে কোশ্চেনেয়ার পাঠিয়েছে, ফাইলের নাম— ‘পিন্টুদা’জ় খুঁটিনাটি’, পিন্টুদার জাঙিয়ার রং আর বেনিয়ানের ব্র্যান্ড ছাড়া কিছুই প্রায় জিজ্ঞেস করতে বাকি রাখেনি। বানিয়ে-বানিয়ে সব প্রশ্নের উত্তর দিতে আমার কালঘাম ছুটে যাবে, কম-সে-কম এক সপ্তাহ লাগবে। তার আগেই একটা হেস্তনেস্ত করা দরকার।

টানা চার দিন পিন্টুদার ইনবক্স শূন্য পড়ে রইল। পঞ্চম দিন রাত্তিরে শুক্তি লিখল, “আমি কম্প সায়েন্সের ক-ও জানি না, তবু আমার আমেরিকা যেতে খুব ইচ্ছে করে।”

এ সুযোগ ছাড়া যায় না। আমি পিন্টুদার জবানিতে লিখলাম, “আমার কিন্তু আমেরিকায় থাকতে একটুও ভাল লাগে না। পোস্ট-ডক কমপ্লিট করেই আমি ইন্ডিয়া ফিরে যাব।”

শুক্তি লিখল, “তোমার গার্লফ্রেন্ডের কী হবে?”

শুক্তি এত জলদি গার্লফ্রেন্ডে চলে যাবে ভাবিনি। সুবিধেই হল, আমি লিখলাম, “সে-ও আমার সঙ্গে ইন্ডিয়া যাবে। বাই দ্য ওয়ে, তোমাকে একটা ভাল খবর দিই, মারিয়া তিন মাসের প্রেগন্যান্ট।”  

যেমন ভেবেছিলাম, শুক্তি ঝপ করে অফলাইন হয়ে গেল। আমি মুচকি হেসে শুতে গেলাম।

 

পরের দিন ঘুম ভেঙে দেখলাম আকাশের মুখ ভার, জোলো হাওয়া দিচ্ছে। শুক্তির কথা ভেবে মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল। বেচারা কাল রাতে একটা বড়সড় দাগা পেয়েছে। বেলা বাড়তে ফোন করলাম, বেজে-বেজে থেমে গেল, শুক্তি ধরল না। ভেবেছিলাম মিসড কল দেখে ফোন-ব্যাক করবে, তাও করল না। আকাশের সঙ্গে সঙ্গে আমার মনটাও ভার হয়ে রইল।

বিকেল পর্যন্ত দেখে ওদের বাড়ি গেলাম। মাসিমা দরজা খুলে দিয়ে গজগজ করতে-করতে বললেন, “সে ছাদে, ঠান্ডা হাওয়ায় দাঁড়িয়ে আছে, ডাকলেও নামছে না…”

তিনতলার ছাদে উঠে দেখলাম, মেঘ সরতে শুরু করেছে। শুক্তি সিল্যুট হয়ে প্যারাপেট ওয়ালে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমার পায়ের শব্দ পেয়ে ফিরে তাকাল। কাছে গিয়ে দাঁড়াতে বলল, “তোর পিন্টুদা তো ক্যাচ-কট-কট।”

আমি আকাশ থেকে পড়লাম, শুক্তি কি কোনও ভাবে আসল পিন্টুদার সঙ্গে যোগাযোগ করে ফেলেছে না কি!  ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইট থেকে পিন্টুদার ইমেল অ্যাড্রেস পেয়েছে বা কোনও জার্নাল পেপারে? কে জানে! শুক্তি বলল, “তোর কাজ শেষ, তুই এ বার তোর পাওনা বুঝে কেটে পড়।”

আমি হাঁদার মতো বললাম, “পাওনা মানে?”

শুক্তি এগিয়ে এসে আমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখল। আমি মুখের মধ্যে একটা ভিজে-ভিজে মিষ্টি স্বাদ পেলাম। আমায় ছাদে দাঁড় করিয়ে রেখে শুক্তি চলে যাচ্ছিল। আমি ডেকে বললাম, “শুক্তি, তুই আমেরিকা যাসনি, তোকে ছাড়া বাঁচব না।”

শুক্তি ঘাড় ফিরিয়ে বলল, “গাধা… এই ক’টা কথা বলতে এত নাটক করতে হল?”

ঠিক তখনই আমায় আশ্বস্ত করে ওর মুখের পাশে শেষ বিকেলের মায়াময় হলুদ আলো এসে পড়ল।