ছাদে এসে দাঁড়াতেই বেশ শীত শীত লাগে সায়নের। মার্চের প্রথম সপ্তাহ। ভোরের বাতাসে বেশ কিছুটা ঠান্ডার রেশ থেকে গিয়েছে। যদিও সায়ন আজই তা টের পেল। এত ভোরে সে কত দিন বিছানা ছেড়ে ওঠেনি, মনেই করতে পারে না। কালকের রাতটা এক রকম অনিদ্রায় কেটেছে। শারীরিক ক্লান্তিতে চোখ মাঝে মাঝে বুঁজে এলেও পর মুহূর্তে কেটে গিয়েছে সেই ঘোর। সারা রাত এ পাশ-ও পাশ করে ভোরের সামান্য আলো জানলা দিয়ে ঘরে আসতেই উঠে পড়ে পাশে রাখা মোবাইলে দেখে, সাড়ে পাঁচটা ।
ছাদে এসে চারদিকে তাকাতে চেনা পাড়াটা বড় অচেনা মনে হয় হঠাৎ। উত্তর কলকাতার এই গলিতে অধিকাংশ বাড়িই পুরনো। প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ। যেমন তাদের নিজেদের বাড়িটা। অবশ্য এরই মধ্যে প্রোমোটারদের দৌলতে কিছু কিছু নতুন ফ্ল্যাট এই সরু গলির মধ্যেও মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। সমস্ত পাড়াটাকে এখন খুব শান্ত মনে হচ্ছে। পুরনো, নতুন সব বাড়িগুলোই একেবারে চুপচাপ, শান্ত হয়ে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে। এতটুকুও শব্দও নেই। প্রতিটা বাড়িতে মানুষগুলো বড় শান্তিতে ঘুমোচ্ছে। কথটা মনে হতেই সায়নের মনে হয়, সত্যিই কি সবাই শান্তিতে ঘুমোচ্ছে, না অনেকে চাপা দুঃখ, চাপা অশান্তি নিয়ে বিছানা আঁকড়ে পড়ে আছে! রাস্তার কলের সামনে সারি সারি বালতি, গামলা রাত থেকেই লাইন দিয়ে রাখা আছে। সেখানেও চেঁচামেচি, ঝগড়াঝাঁটির পরিচিত ছবিটা অনুপস্থিত। হঠাৎ তার মনে হয়, ভোরবেলাটা বড় মমতাময়। বেদনাদগ্ধ মনে কিছুটা যেন শান্তির স্পর্শ দিতে পারে।
তিনতলার এই ছাদটা একেবারে জরাজীর্ণ। অনেক জায়গাতেই প্লাস্টার খসে পড়েছে। এই পুরনো বাড়ির একটা অংশ আলাদা করে সংস্কার করা খুবই বিপজ্জনক। বহু শরিকের এত বড় বাড়ি সংস্কার করতে যে বিপুল অর্থের প্রয়োজন তা জোগাড় করা অনেকেরই সামর্থ্যের বাইরে। যাদের আবার সামর্থ্য আছে, তারা কেউই এখানে থাকে না। নিজেদের অংশ ভাড়া দিয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে। সায়নও একটা সময়ে ছোটখাটো একটা ফ্ল্যাট কিনে এখান থেকে চলে যাওয়ার উদ্যোগ শুরু করেছিল। এখন সে সব চিন্তাভাবনা ছেড়ে দিয়েছে।
এই ভাঙাচোরা, ইট বার করা ছাদটা কিন্তু কিছুটা শ্রী পেয়েছে সায়নের মার শখ আর হাতের স্পর্শে। ছাদে সারি সারি টবে ফুলের গাছ। এখন নানা রঙের মরশুমি ফুল ফুটে আছে টবের গাছগুলিতে। সায়ন বহু দিন এই বাগানটার দিকে ভাল করে তাকিয়েও দেখেনি। আজ ছাদে এসে দেখছে। তাই হয়তো আজ পায়চারি করতে তার খুব ভালও লাগছে। লাল, হলুদ, বেগুনি ফুলগুলো যেন চোখের মধ্যে দিয়ে ঢুকে মনের ভিতর একটা কোমল স্পর্শ ছড়িয়ে দিচ্ছে।
হঠাৎ চমকে ওঠে সে। ছাদের এক কোণে টবে ফুটে থাকা ফুলটা দেখে দ্রুতপায়ে এগিয়ে আসে। কাছে এসে দেখে, গাঢ় সবুজ পাতার মধ্যে ফুটে আছে একটা হলুদের উপর লাল ছিটে দেওয়া ফুল। ফুলের উপর কয়েক ফোঁটা বৃষ্টির জল, যেন কয়েক ফোঁটা অশ্রু। ফুলটাকে দেখে সায়নের মনে হয়, উত্তর কলকাতার এই ছাদে কালিম্পং নেমে এসেছে।
******
বেলা প্রায় সাড়ে চারটে। নভেম্বরের শেষ কালিম্পং-এর পাহাড়ি রাস্তার পাশে একটা ঢালু জায়গায় পাথরে হেলান দিয়ে বসে আছে মেয়েটা। তার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে ছেলেটা। হঠাৎ করে ছেলেটা লাফিয়ে উঠে বলে, ‘‘ওরে বাবা রে, কী ঠান্ডা! তাড়াতাড়ি হোটেলে চলো।’’
‘‘ধ্যাত! কী এমন ঠান্ডা, আর একটু বসে থাকি। ভাল লাগছে খুব আমার,’’ বলে মেয়েটা।
‘‘তুমি বসে থাকো তা হলে, আমি চললাম,’’ বলে ছেলেটা ঢালু রাস্তা বেয়ে নামতে থাকে।
বাধ্য হয়েই উঠে পড়ে মেয়েটা। রাস্তা দিয়ে নামতে নামতে বলে, ‘‘খালি হোটেলে যাওয়ার মতলব তোমার।’’
কথাটা শোনামাত্র ছেলেটা পিছিয়ে এসে মেয়েটাকে দু’হাতে জড়িয়ে ধরে বলে, ‘‘ঠিক ধরেছ। সেটাই তো আমি চাই।’’
এর পরেই দু’জনে হাসতে হাসতে ঢালু রাস্তা পেয়ে নামতে থাকে। কিছুটা নামতেই একটা ভুটিয়া বস্তি। বস্তিটার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে মেয়েটা বলে ওঠে, ‘‘দেখো, দেখো কী সুন্দর ফুলটা।’’
******
দু’জনেই এগিয়ে যায় ফুলের দিকে। ঘন সবুজ পাতার মধ্যে ফুটে আছে মস্ত বড় ফুল। সোনালি রঙের পাপড়িগুলোর ওপর একটু একটু লালের ছিটে। আশপাশে আরও কয়েকটা গাছে আধফোঁটা ফুল। কুঁড়িও ফুটে ছিল। ছেলেটার গলায় বিস্ময়: ‘‘সত্যি...অপূর্ব!’’
তাদের কথাবার্তা শুনে ঝুপড়ির মধ্য থেকে মাঝবয়সি একটা লোক বেরিয়ে আসে। তাদের দু’জনকে ফুলটার দিকে তাকিয়ে থাকতে আর কথা বলতে দেখে বলে, ‘‘মেমসাব ফুল নেবেন ?’’
সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটা মাথা নাড়িয়ে বলে, ‘‘হ্যাঁ, নেব।’’
মাঝবয়সি সাবধানে ফুলটা ছিঁড়ে দেয় মেয়েটার হাতে।
‘‘কী সুন্দর,’’ আবার বলে মেয়েটা।
‘‘গাছ নেবেন মেমসাব?’’
‘‘ খুব ইচ্ছে করছে। কিন্তু এই গাছ কি বাঁচবে কলকাতায়?’’
‘‘বাঁচবে মেমসাব, বেশি ধুপে রাখবেন না। আনেক পানি দেবেন।’’
মেয়েটার উত্তরের আপেক্ষা না করে একটা চারাগাছ তুলে দেয় মেয়েটার হাতে। লোকটা কিছুতেই টাকা নিতে রাজি হয় না। মেয়েটার পকেটে ছিল কয়েকটা লজেন্স। তাই বাড়িয়ে দিল সে। হেসে গ্রহণ করল মাঝবয়সি।
হোটেলে ফিরে ঘরের ফুলদানিতে রাখা ফুলটা সরিয়ে মাঝবয়সির দেওয়া ফুলটা রাখে মেয়েটা। ছেলেটিকে বলে, ‘‘দেখো, কী সুন্দর লাগছে!’’
ছেলেটা দু’হাতে মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে বলে, ‘‘আমি তো আরও সুন্দর একটা ফুল দেখতে পাচ্ছি।’’
‘‘এই কী হচ্ছে কী, ছেড়ে দাও।’’
‘‘ছাড়বার জন্য তো ধরিনি।’’
‘‘ফুল নিয়ে কেউ এ রকম করে নাকি?’’ আদুরে গলায় বলে মেয়েটা।
‘‘আমি তো ভাল ছেলে নই,
দুষ্টু ছেলে।’’
সে রাত্রে কালিম্পংয়ের তীব্র ঠান্ডা হোটেলের ঘরের উষ্ণতার কাছে হার মেনেছিল।
******
কলকাতায় ফিরে গাছটা টবে পুঁতে দেয় মিমি। ছাদের যে দিকে রোদ কম, সেখানে টবটাকে রেখে প্রতিদিন জল দিতে থাকে ভাল করে। কালিম্পংয়ের দিনগুলোর ঘোর লেগে থাকে। বেশ ক’টা দিন হাসিঠাট্টা আর খুনসুটি চলে দু’জনের মধ্যে। রাতগুলো কাটে উষ্ণতার মধ্যে। কিন্তু হঠাৎ এক দিন সুর কেটে যায়। সায়ন বুঝতে পারে উত্তর কলকাতার এই ইট বার করা বাড়িতে কালিম্পংকে বেশি দিন ধরে রাখা যাবে না।
সে দিন অফিস থেকে ফিরে সবে ঘরে এসে বসেছে, মুখোমুখি এসে বসে মিমি। ‘‘ফ্ল্যাট কেনার কী হল?’’
‘‘দাঁড়াও, এই তো সবে অফিসে জয়েন করলাম।’’
‘‘সবে বলছ কেন? দু’মাস তো হয়ে গেল আমরা ফিরেছি।’’ এ বার গলায় ঝাঁজ চাপা থাকে না।
‘‘ঠিক আছে, দু-এক দিন বাদে চলো দু’জনে মিলে যাই। একটা ফ্ল্যাট তো আমি আগে দেখেছিলাম। তোমার পছন্দ হলে কথা বলে আসব।’’
‘‘কত স্কোয়্যার ফুট? ক’টা ঘর?’’
‘‘সাড়ে সাতশো। দুটো ঘর।’’
‘‘ওইটুকু ফ্ল্যাটে কী হবে? ওখানেও তো সেই একই অবস্থা হবে। দমবন্ধ হয়ে যাবে।’’
‘‘দেখো এর চেয়ে বড় ফ্ল্যাট কেনার সামর্থ্য এই মুহূর্তে আমার নেই। তুমি তো জানো আমি কত বেতন পাই। আমি তো তোমাকে সবই বলেছিলাম। তুমি আমার বাড়িঘর সবই তো দেখেছিলে আগে।’’
‘‘ও সব পুরনো কথা আজ আর তুলে লাভ নেই,’’ উঠে যায় মিমি।
******
জামাকাপড় না ছেড়েই বিছানায় শুয়ে পড়ে সায়ন। তীব্র একটা অপমানবোধ বিদ্ধ করতে থাকে তাকে। মনে পড়ে যায়, বিয়ের আগে সে বারবার তাদের অবস্থার ফারাকের কথা বলেছিল মিমিকে। সমস্ত দিক ভেবে দেখতে বলেছিল। কিন্তু সে তখন আবেগের স্রোতে ভেসে চলেছে। তার কথায় কর্ণপাতও করেনি। সে দিন সেও মিমির আবেগের তীব্রতাকে উপেক্ষা করতে পারেনি। তাদের বিয়েটা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই বুঝেছিল, তাদের দুটো পরিবারের মধ্যে অবস্থার যে ফারাক, তা মেনে নেওয়া মিমি এবং তার বাড়ির লোকের পক্ষে সম্ভব নয়। শ্বশুরবাড়ির ব্যবহারে সায়নের প্রতি তাচ্ছিল্য চাপা ছিল না, তাই শ্বশুরবাড়ি যাওয়াই সে ছেড়ে দিয়েছে।
পরদিন সকালে উঠে মিমি বলে, ‘‘আমি আজ বাবার কাছে যাচ্ছি, থাকব কয়েক দিন।’’
‘‘ঠিক আছে।’’
আর কোনও কথা হয় না দু’জনের। এ ভাবেই চলতে থাকে দুটো জীবন। মাঝে মাঝে যেন দমবন্ধ লাগে সায়নের। সে দিন রাতে খাওয়া-দাওয়া সেরে সবে শুয়েছে সায়ন, মিমি এসে খাটের ওপর বসে আদুরে গলায় বলে, ‘‘আমার একটা কথা রাখবে ?’’
মিমির কথা বলার ভঙ্গিতে দারুণ অবাক হয়ে যায় সায়ন। এই অন্তরঙ্গতা বহু দিন তাদের মধ্যে থেকে বিদায় নিয়েছে। হঠাৎ আজ এমন কী হল বুঝতে পারে না। বলে, ‘‘কী কথা বলো।’’
‘‘আমার বাবার অফিস আছে বালিগঞ্জ প্লেসের একটা ফ্ল্যাটে,
জানো তো।’’
‘‘জানি।’’
‘‘বাবা ওই অফিসটা তুলে নিয়ে যাচ্ছেন সল্টলেকে। ফ্ল্যাটটা খালি হয়ে যাচ্ছে। বাবা আমাদের ওই ফ্ল্যাটে চলে যেতে বলছেন।’’
‘‘অসম্ভব,’’ কথাটা শোনামাত্র বলে সায়ন।
সঙ্গে সঙ্গে সোজা হয়ে বসে তীব্রকণ্ঠে বলে মিমি, ‘‘অসম্ভব কেন? বাবা তো আমাদের দিতেই পারেন।’’
‘‘তোমাকে দিতে পারেন, তুমি ইচ্ছে করলে গিয়ে থাকতেও পারো। আমি যাব না।’’
‘‘এই ভাঙাচোরা বাড়িতেই তুমি তা হলে থাকবে চিরকাল?’’
‘‘আমার সাধ্য মতো চেষ্টা তো আমি করছি।’’
‘‘তোমার মুরোদ আমার জানা।’’
আর কথা বাড়াতে ইচ্ছে করে না সায়নের। বাকি রাতটা নিঃশব্দে কেটে যায়। পরদিন সকালেও কোনও কথা হয় না। দুপুরে অফিসের কাজে ব্যস্ত সায়ন তখন, ফোন করে মিমি বলে, ‘‘আমি বাবার কাছে চলে যাচ্ছি।’’
কোনও উত্তর না দিয়ে ফোনটা ছেড়ে দেয় সায়ন। এর পর দু’জনের যোগাযোগ প্রায় ছিন্ন হয়ে যায়। কেউ কাউকে ফোন করে না। পনেরো দিন কেটে গেলেও মিমি না ফেরায় শেষ পর্যন্ত ফোন করে সায়ন। ‘‘কী হল? কবে ফিরবে?’
‘‘বলতে পারছি না,’’ নির্লিপ্ত ভাবে বলে মিমি।
‘‘মানে?’’
‘‘আদৌ ফিরব কি না ভাবছি।’’
‘‘কেন জানতে পারি?’’
‘‘তোমার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারব বলে মনে হয় না।’
আর কিছু বলে না সায়ন। সম্মানে লাগে। ফোন রেখে দেয়। এর পর যা অবশ্যম্ভাবী তাই হয়। দু’জনের সম্মতিতে আবেদন করে কোর্টে। জজসাহেবের আবেদন, বোঝানো, সব কিছুর শেষে আজ তাদের আবেদনের উপর কোর্টের সিলমোহর পড়তে চলেছে। ইতিমধ্যে মিমি তার জীবনের প্রথম ভুল সংশোধনের পথে অনেকটা এগিয়ে গেছে। সে খবরটাও জানতে পেরেছে।
অপমানক্লিষ্ট মনে যখন সইটা করার জন্যে নিজেকে প্রস্তুত করে ফেলেছিল, ফুটন্ত ফুলটা কেমন যেন সব গোলমাল করে দিল। অন্য ধরনের একটা কষ্টে মনটা অস্থির লাগে। ঘরে এসে বেশ কিছু ক্ষণ চুপচাপ শুয়ে থাকে সায়ন। শেষ পর্যন্ত আর থাকতে না পেরে মোবাইলটা তুলে নেয়।
এত সকালে ফোন বাজতে অবাক হয়ে যায় মিমি। রাতেই তো রাহুলের সঙ্গে কথা হয়েছে। রাহুল বলে দিয়েছে সইটা হয়ে যেতেই তাকে জানিয়ে দিতে। সে দিন ঠিক করবে। তার পর ধীরে ধীরে হোটেলের ব্যাঙ্কোয়েটটা বুক করবে, লোকজনকে বলা ইত্যাদি। এত সকালে আবার কী দরকার পড়ল?
******
সায়নের ফোন দেখে অবাক হয়ে যায় মিমি। ‘হ্যালো’ বলতেই ও পাশ থেকে সায়ন বলে, ‘‘তোমাকে একটা অনুরোধ করব, রাখবে?’’
‘‘কী অনুরোধ?’’
‘‘আজকের দিনটা কোর্টের কাজটা বাদ দাও, এর পর যে দিন ঠিক হবে আমি কথা দিচ্ছি সে দিন আমি কোনও ভাবেই ফেল করব না।’’
‘‘কেন কী হয়েছে?’’
‘‘বলছি। জানি তোমার খুবই অসুবিধে করলাম। শুধু এই একটা দিন, তুমি প্লিজ় আমার কথা রাখো।’’
‘‘কী হয়েছে বলবে তো?’’ কণ্ঠে বিরক্তি মিমির।
সায়ন এক বার ভাবে বলে, ‘শরীর খারাপ হয়েছে।’ কিন্তু মিথ্যেটা বলতে ইচ্ছে করে না। বলে, ‘‘কালিম্পং থেকে আনা গাছটায় আজ ফুল ফুটেছে।’’
কথাটা শুনে চুপ হয়ে যায়, কথা খুঁজে পায় না মিমি। তার পর কোনও রকমে বলে, ‘‘ঠিক আছে।’’
‘‘অনেক ধন্যবাদ তোমাকে।’’ ফোনটা ছেড়ে দেয় সায়ন।
চুপ করে বসে থাকে মিমি। অনুভব করে, কালিম্পং এ বার চিরকালের মতো হারিয়ে যেতে চলেছে তার জীবন থেকে। ফুলটা খুব দেখতে ইচ্ছে করছে তার। কিন্তু তা কী করে সম্ভব? কিন্তু খুবই কি অসম্ভব? আবার ফোনটা হাতে নেয় মিমি।