Abosar

<img src=https://images.prothomalo.com/prothomalo-bangla%2F2022-03%2F0757dbbc-a473-4911-9bf0-75fcc660ea78%2FJol_dake.gif?w=1200&ar=40%3A21&auto=format%2Ccompress&ogImage=true&mode=crop&overlay=&overlay_position=bottom&overlay_width_pct=1 />

জল ডাকে

ধ্রুব এষ



জল ডাকে। জলের ঘূর্ণি।

ভাটি অঞ্চলের মানুষ বলে কুরুল্লা।

সাবিত্রীকে সে-ই কুরুল্লা ডাকে।

বানভাসি নদীর কুরুল্লা।

যমকুলি–ডাকা সন্ধ্যায় ডাক দেয়, আয়।

শরীর ঝমঝম করে সাবিত্রীর।

দুঃখ কি দুর্গাপ্রতিমার মতো? বিসর্জন দেওয়া যায়? তবে কুরুল্লার ডাক শুনত সাবিত্রী। সব দুঃখ বিসর্জন দিত কুরুল্লায়।

দুই বোন সতী–সাবিত্রী। মা সরলা, বাপ সুখময়। ভগবান সুখময় শুক্লবৈদ্য। সাবিত্রী তার বোন সতীকে দেখেনি। তার জন্মের আগে সে মরেছে। ভালো করেছে। নাহলে সাবিত্রীর মতো যদি কপাল হতো তার।

কপাল। আবার পোয়াতি হয়েছিল সাবিত্রী। আবার তার পেটের সন্তান পেটে মরেছে। সুবলচন্দ্র অবশ্য এ নিয়ে কোনো প্রকার গঞ্জনা তাকে দেয়নি। দেয় না। ধরে নিয়েছে, সারা জীবন তার বউয়ের পেটের সন্তান পেটে মরে যাবে। শেষটাকে নিয়ে ছয়টা মরল।

ঘাটে পাড়া আছে। সুবলচন্দ্রের নিত্য গতায়াত পাড়ায়। যার ঘরে যায়, তার নাম সোহাগী। হাত ভরে সবুজ কাচের চুড়ি পরে, পায়ে আলতা পরে ওই মেয়ে। সুবলচন্দ্র বলেছে তার বউকে।

‘তারে যদি তুমি একদিন দেখতা! হুবহু চিত্রনায়িকা সুচরিতার মতনই দেখতে। পাড়ার আর কুনু মেয়ে তার মতনই না। হাসি দেয় কেমুন, সুর্চিতা সেন ফেইল। যদি দেখতা!’

‘আমি তারে কী করে দেখব গো?’

‘আচ্ছা, তোমারে একদিন নিয়া যাব পাড়ায়।’

‘এই সব কী বলেন আপনে! মা গো!’

সুবলচন্দ্র হাসে

বছর আষ্টেক ধরে ঘাটের পাড়ার সব থেকে দামি মেয়ে সোহাগী। নৃত্য–গীত পারে। বাদ্যবাজনা হয় তার ঘরে। সুবলচন্দ্র সেই গানের দলের মানুষ। বাজনদার। আসরে সিঙ্গেল হারমোনি বাজায়। এ বাবদ মাসান্তে টাকা পায় কিছু। সোহাগীর ভাউড়া সিনু সেই টাকা বুঝিয়ে দেয়।

‘ঘাউড়া! ঘাউড়া কি গো? ওই মেয়ের কী হয়?’

‘ঘাউড়া না, হে হে হে, ভাউড়া, ভাউড়া। পাড়ার মেয়েদের বিপদ-আপদ কম? সব সামলায়-সুমলায় ওই গুন্ডা ব্যাডারা। তবে গুন্ডা হইলেও বুঝছ, সোহাগীর ভাউড়া সিনুর ই নাই। হে হে হে।’

‘কী নাই গো?’

‘বোঝো নাই? আসো বোঝাই। আসো…’

‘কী করেন গো! কী করেন!’

‘ডুগডুগি বাজাই! ডুগডুগি! লাউয়ের/ আগা খাইলাম/ ডুগা গো খাইলাম/ লাউদি বানাইলাম ডুগডুগি…’

‘কী করেন! মা গো! লাজ নাই আপনের…?’

সুবলচন্দ্র ভালোবাসে তার বউকে। না হলে সূর্যকান্ত, সুধীর, সমরেন্দ্র—প্রত্যেকে একাধিকবার তাকে বলেছে, ‘আর একটা বিয়া কর তুই।’ সূর্যকান্ত তার কিশোরী শ্যালিকা সরস্বতীর রূপ-গুণের প্রশংসা করেছে, ‘তার মতো মেয়ে এই ভাটি অঞ্চলে আর এক পিস পাবি না।’

সুখাইর পরগনার সুবিমল কৈবর্তর বউ এখন সরস্বতী। দুই সন্তানের জননী হয়ে বসে আছে। সুবিমল কৈবর্ত সপ্তাহের দুই হাটবারে—শনিবার, বুধবার—পাড়ার এর–তার ঘরে ঢুঁ দেয়। বসে। সুবলচন্দ্রের সঙ্গে দেখা হয় কোনো দিন। কথাবার্তা হয়।

‘সুবল দাদা।’

‘বলো সুবিমল।’

‘তুমি সস্বতীরে বিয়া করবা?’

‘সে তোমার বউ সুবিমল।’

‘বউ হইলে বউ। তুমি যদি তারে বিয়া করো, বলো। ব্যবস্থা নেই। আমি বিয়া করব সানাইরে।’

পাড়ার ছেচল্লিশ নম্বর ঘরের মেয়ে সানাই। সন্নো মাসির মেয়ে।

সোহাগী ‘চ্যাম্পিয়ন’ পাড়ার। সানাই ‘রানারআপ’। তার ঘরে সুবিমল কখনো বসেনি। অত টাকা জেবে থাকে না তার।

সাচনা বাজারের সহবত ব্যাপারী, সিধার বাজারের সবক মহাজন, সানকিভাঙ্গার সহিদুল ঠিকাদারের দিনক্ষণ ঠিক করা থাকে। সানাই তাদের সময় দিয়ে পারে না, আর সুবিমল! সবুর যদি পায়, তবে খবর করে দেবে কৈবর্তর ছেলের। ‘ড্যাগার’ সবুর, সানাইয়ের ভাউড়া। সে কিলার, ড্যাগার দিয়ে মানুষ খুন করে।

‘পুলিশ তারে ধরে না?’

‘ড্যাগার সবুররে?’ সুবলচন্দ্র মধ্যম মার্গের হাসি হাসে এবং অবগত করে বউকে, ড্যাগার সবুর যথেষ্ট খাতির করে তাকে। দাদা ডাকে।

‘বেডির নাম সানাই, সেয় কেমুন দেখতে?’

‘সানাইয়ের মতনই। হে হে হে।’

সুবলচন্দ্র সরলসিধা মানুষ। কোনো রকম জটিলতায় নেই। জলের ডাকের কথা তাকে বলেনি সাবিত্রী। কুরুল্লার কথা বলেনি। সিধা মানুষ সিধামতো বুঝবে। তবে সাবিত্রীর কোনোই অভিযোগ নেই তার সরলসিধা বাজনদার পতিদেবতাকে নিয়ে। শুধু পেটের একটা যদি থাকত! দুঃখ। বুকভর্তি এই দুঃখ সাবিত্রীর। এত দুঃখ যে তাকে জল ডাকে। কিংবা কুরুল্লা। আয়। কেন ডাকে? সুদিন কাকা থাকে কুরুল্লার তলায়? আরও তলায় টেনে নিয়ে যাবে সাবিত্রীর শরীর? না সেই শিশু?

তনুমন বাজে সাবিত্রীর। তার মনে হয়, তার সমস্ত রক্তকণিকা সাধন ঘোষের মিষ্টির শিরা হয়ে ফুটছে।

সুখময়ের খুড়তুতো ভাই সুদিন। তার দোকান ছিল সাচনা বাজারে। সুদিন হেয়ার কাটিং সেলুন। বৃষ্টিমুখর সেই সন্ধ্যা। হঠাৎ বৃষ্টি ধরেছিল এবং যমকুলি ডেকে উঠেছিল। ব্যাঙ, ঝিঁঝি চুপ। গ্রাম নিশ্চুপ। সাবিত্রীকে গোয়ালঘরের আন্ধারে টেনে নিয়ে গিয়েছিল সুদিন কাকা। কুরুল্লার ডাক ঢুকিয়ে দিয়েছিল মাথায়।

‘এই দেখ ক্ষুর। গলা কেটে কুরুল্লায় ফেলে দেব কাউরে কিছু বললে।’

বানভাসি নদীর কুরুল্লা।

তখন বয়স কত সাবিত্রীর? চৌদ্দ কি? তেরো কি? ডরে জ্বর উঠে গিয়েছিল তার। কাকে কী বলবে?

দুই মাস পর বুঝেছিল সরলা।

‘একি সর্বনাশ করলি রে মুখপুড়ি? ভগবান! ও ভগবান!’

পরের অত কিছু মনে নেই সাবিত্রীর। তার পেটে প্রাণ ধরেছিল সে। সেই প্রাণ জন্ম নিতে পারেনি। কুরুল্লায় গেছে। নদীর কুরুল্লায়। এখনো তার মাথায় ঘোরে সেই কুরুল্লা বা অতল জলের আহ্বান। কুরুল্লা ডাকে, আয়।

সব সময়?

সব সময় না। আরেকটা প্রাণ যখন প্রাণে ধরে সে, সিঁটিয়ে থাকে সেই ডাকের আশঙ্কায়। এবং ডাক পায়। আয়।

সুবলচন্দ্রের দাদা সতীশচন্দ্র বুড়ো নিজে দেখে নাতবউ পছন্দ করেছিল। আর কে করবে? সুবলচন্দ্রের বাপ সুকেশচন্দ্র অকালে মরেছে যক্ষ্মায়। মা সুলতা আরও অল্প বয়সে। অনাথ সুবলচন্দ্র সুকেশচন্দ্রের খেয়েপরে বাত্তি হয়েছে, দামড়া হয়েছে।

সাবিত্রীকে পলক দেখেই মনে ধরে গিয়েছিল বুড়োর। মেয়ের বাপ সুখময় নয়, সিধা মেয়ের সঙ্গেই কথা পেড়েছিল বুড়ো, ‘আমার শালারে বিয়া করবি রে শালি?’

তাদের বিয়ের পর বুড়ো আর দুই বছর ছিল ধরাধামে। বড় স্নেহ করত নাতবউকে। কত কী গড়ে দিয়ে গেছে সংসারের। সুবলচন্দ্র শ্রাদ্ধ করেছিল তার, অষ্টপ্রহর ধরে কীর্তন হয়েছিল শ্মশানে। এই সময় পোয়াতি হলো সাবিত্রী। জল ডাকল তাকে, কুরুল্লা ডাকল। আয়। বানভাসি নদীর কুরুল্লা সম্মোহক। সুচেতনা অবশ করে দেয়। অত খবর রাখে না বলে সুবলচন্দ্র বেজায় খুশি হয়েছিল তার বউ পোয়াতি শুনে। কোনোভাবে তার মনে এই পেত্যয় জন্মেছিল যে সুকেশচন্দ্র বুড়ো আবার তার ঘরে জন্মাচ্ছে। পোষা গণক আছে সোহাগীর। নানা কিছু গণনা করে দেয়। সনাতন গণক। তার প্যাঁচের কথা বোঝেনি সুবলচন্দ্র, ‘যদি হয় পুত্রসন্তান হইবে।’

যদি হয়।

হয়নি।

পেটের সন্তান পেটে মরে যায় সাবিত্রীর। সুবলচন্দ্র অবশ্য তাতে আতান্তরে পড়েনি মোটে। তার দিন যায় বাদ্যবাজনায়।

আতান্তরে পড়েছে সাবিত্রী। পোয়াতি হলেই তার মনে হয় সেই সন্তান তার পেটে ফিরেছে, যে তলিয়ে গেছে কুরুল্লায়। জলের কুরুল্লা তাকে ডাক দেয়, আয়।

কপাল।

বানভাসিতে গ্রামবাংলার অপরূপ বিল–ঝিল–নদী একাকার হয়ে যায়। সুবানপুরের এক ধানখেতের আলে লাশ আটকে ছিল সুদিন কাকার। সুবানপুর বহুদূর। মাছেরা ঠুকরে সুদিন কাকার হাড়হাড্ডি বের করে দিয়েছিল। মড়ার এক চোখের কোটরে বউমাছ ছিল। সাবিত্রী দেখেনি। জানে।

সুদিন কাকার মড়া পোড়ানোর রাতে জল ফুঁসে উঠেছিল। নদী, ডোবা, নালা, পুকুর, হাওর, বাঁওড়ের। মানুষের ঘরদোর, শ্মশান-মশান ডুবে গিয়েছিল বানভাসির জলে। সুদিন কাকার মড়া পোড়েনি, আধপোড়া মড়া বানভাসির মহাকুরুল্লা টেনে নিয়ে গিয়েছিল। সেই মড়ার আর সন্ধান মেলেনি। কুরুল্লায় পড়ে আরেক কুরুল্লা হয়ে গেছে সুদিন কাকা। অত কথা বললে সুবলচন্দ্র বুঝবে?

আবার পোয়াতি হলো সাবিত্রী। আবার জলের ডাক ফিরল তার মাথায়। ভীষণ কুরুল্লা।

পানি পীরের মাজার নদী পার হয়ে। ওরস হয় আষাঢ়ে, ভাসা পানির দিনে। সোহাগী যায় গানের দল নিয়ে। সুবলচন্দ্র পানি পীরের মাজার থেকে পানি–তাবিজ এনে দিল বউকে। তাগা এনে দিল। সাবিত্রী মাজারের তাবিজ কোমরে পরল।

‘জলের বিপদ আর তোমারে ধরব না।’ সুবলচন্দ্র বলল।

সাবিত্রী চমকাল, ‘জলের বিপদ! কী বিপদ গো?’

‘কত বিপদ! হে হে হে। পানি–তাবিজ মহাশক্তিধর। জলের যত বিপদ, সব থেকে তোমারে রক্ষা করবেন বাবা পানি পীর।’

জলের বিপদ কী?

জলের ডাক? কুরুল্লা?

পানি পীর ভাটির পীর। ভাটির সব পানির জিম্মাদারি তার। তবে কুরুল্লার জিম্মাদারিও?

সেই শিশু। কোন শিশুর কথা মনে করে সাবিত্রী? কুরুল্লায় যে তলিয়ে গেছে এক যমকুলি–ডাকা সন্ধ্যায়? সে কি শিশু হয়ে গিয়েছিল? কত দিনে একটা প্রাণ শিশু হয়? কোনো অবয়ব ছিল সেই শিশুর? চোখ, মুখ, নাক, হাত, পা?

সাবিত্রী একদিন পানি পীরকে দেখল। এই লম্বা সাদা মানুষ। জলরঙের। বানভাসির নদী হেঁটে পার হচ্ছেন।

‘বাবা!’

আর্তনাদ করল সাবিত্রী। পানি পীরের পা কুরুল্লায় পড়েছে।

‘বাবা!’

পানি পীর ছোট হয়ে যাচ্ছেন। হয়ে গেছেন। সাবিত্রী তার শিশুকে দেখল। ন্যাংটো সেই শিশু, কোমরে তাগা। হাসতে হাসতে তলিয়ে গেল কুরুল্লায়।

স্বপ্ন। দুঃস্বপ্ন। এত ঠান্ডা হয়? ঘুম ভেঙে উঠে বসে থাকল সাবিত্রী। তারা শোয় একটা পুরোনো পালঙ্কে। সুবলচন্দ্রের ঠাকুমা সুরধনিকে তার বাবা সহদেব চন্দ নিজ হাতে গড়ে দিয়েছিলেন। সুরধনির ভাইপো ভাটি অঞ্চলের সেরা কাঠমিস্ত্রি সুখেন চন্দ। ষাটের বেশি বয়স, শক্তপোক্ত মানুষ। পানি পীরের মুরিদ। সে-ই পানি পীরকে দেখেছে স্বপ্নে, শরীর কাঁটা দিয়ে উঠল সাবিত্রীর। স্বপ্ন হোক, পানি পীর কেন সেই শিশু হলেন? সেই শিশু, যে তলিয়ে যায় কুরুল্লায়, স্বপ্নেও।

সুদিন কাকার মেয়ে সাথির বিয়ে হয়েছিল গত আগনে। আরেক আগন না আসতে সে বিধবা। লঞ্চডুবি হয়ে মরেছে জামাইটা। সুদিন কাকার ছেলে দুটাও মরবে। সুজিতদা, সুদীপদা। জলে ডুবে মরবে।

বছর পর আবার এক বানভাসির সন্ধ্যা।

দুপুরে ঘুম ধরে গিয়েছিল সাবিত্রীর। সুবলচন্দ্র চলে গেছে পাড়ায়। কখন ফিরবে, ঠিক নেই। আসর বসবে আজ সোহাগীর ঘরে।

সন্ধ্যায় ঘুম থেকে উঠে ঠাকুরনিদ্রা দিয়ে অন্ধকারে আবার শুয়ে থাকল সাবিত্রী। যমকুলি ডাকল রাইস মিলের বটগাছ থেকে। সাবিত্রীর বুক কাঁপল। যমকুলির ডাক কু। কাউকে না কাউকে নিতে ডাক দেয়। আজ কাকে নেবে?

পেটে নড়ল সাবিত্রীর শিশু। অব্যক্ত তার ভাষা শুনল সাবিত্রী।

‘জল ডাকে মা। কুরুল্লা ডাকে।’

সত্যি জল ডাকছে। কুরুল্লা ডাকছে।

আবার যমকুলি পাখিটা ডাকল।

বুক ঝমঝম, বুক ছমছম। সাবিত্রী উঠল।

নদী অদূরে।

বানভাসির নদী। কূল নাই, কিনার নাই।

অন্ধকার নদীভর্তি কুরুল্লা।

সাবিত্রীকে কি নিশিতে পেয়েছে? জলনিশি?

আকাশের কিছু মেঘ সরে গেল হাওয়ায়। তুমুল জোছনা ঝিলিক দিয়ে নদীতে পড়ল। কুরুল্লার গহিনে। কোন কুরুল্লা টেনে নিয়ে গেছে তার শিশুকে? বারবার নিয়ে যায়? আধপোড়া সুদিন কাকার মড়া কি কুরুল্লায় পাক খায় এখনো?

‘না।’

কে বলল?

নদী বলল?

নদী বলল।

অহর্নিশের সঙ্গী নদী, অচিন জলের ধারা মনে হলো সাবিত্রীর। অচিন কুরুল্লা। ঝিকমিক করছে কোন অপারের জোছনায়।

‘আয়।’

জলের ডাক শুনল সাবিত্রী।

‘আয়।’

কুরুল্লার ডাক শুনল সাবিত্রী।

নাকি তার শিশু ডাকে মাকে?

সেই ডাক মা হয়ে সে শুনবে না?

শিশু কুরুল্লার অন্তর্গত হলেও।

চার মাস পর আরেক শীতকাল।

সুবলচন্দ্রর বউ সাবিত্রী মা হলো।

মেয়ে হলো।